রুশ-নিয়ন্ত্রিত ক্রাইমিয়ার এক তেলের ডিপোতে ড্রোন হামলায় বিশাল অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিওতে সেভাস্টাপোলের এই এলাকার ওপর ধোঁয়া এবং আগুনের কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে।
অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। এই ঘটনায় কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন মস্কোর নিয়োগ করা আঞ্চলিক গভর্নর।
শুক্রবার রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে বেশ কিছু শহরে হামলা চালিয়েছিল। এতে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়। গত কয়েক মাসের মধ্যে এটি ছিল এধরনের প্রথম হামলা।
রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করার পর এটি নিজেদের সীমানাভুক্ত করেছিল। কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার যে নৌবহর আছে, তাদের প্রধান ঘাঁটি এই ক্রাইমিয়ায়।
“কাযাচিয়া বে এলাকায় একটি তেলের গুদামে আগুন ধরে গেছে”, টেলিগ্রামে এক বার্তায় জানান গভর্নর মিখাইল রাজভোঝায়েভ। “প্রাথমিক যে তথ্য আমরা পেয়েছি, তাতে মনে হচ্ছে ড্রোন হামলার কারণেই আগুন ধরেছে।”
পাঁচদিন আগে রাশিয়া জানিয়েছিল, তারা এই এলাকায় ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর একটি ড্রোন হামলা ঠেকিয়ে দিয়েছে। তারপর এই হামলার ঘটনা ঘটলো। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ক্রাইমিয়া ক্রমাগত হামলার শিকার হয়েছে।
শুক্রবার রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যে অনেকগুলো হামলা চালিয়েছিল, তার একটি গিয়ে আঘাত করেছিল মধ্যাঞ্চলীয় শহর উমানের একটি বহুতল আবাসিক ভবনে। সেখানে যে ২৩ জন নিহত হয়, তার মধ্যে চারটি শিশু ছিল।
অন্যদিকে নিপ্রো শহরে আরেক হামলায় এক নারী এবং তার তিন বছর বয়সী কন্যা মারা যায়।
গত ৫১ দিনের মধ্যে কিয়েভেও এই প্রথম হামলা চালানো হয়। তবে রাজধানীতে কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ২১টি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং দুটি ড্রোন তারা আকাশেই গুলি করে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
অন্যদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের রিজার্ভ সেনা ইউনিটগুলোকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। মস্কো এর আগে বলেছিল, তারা ইচ্ছেকৃতভাবে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা চালায় না। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ আহত বা নিহত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এসব হামলা আবারও প্রমাণ করেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, “এই অশুভ শক্তিতে থামানো সম্ভব অস্ত্র দিয়ে… এবং নিষেধাজ্ঞা দিয়েও তাদের থামানো সম্ভব। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বাড়াতে হবে।”
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, তারা পশ্চিমা দেশগুলো থেকে পাওয়া নতুন সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে নতুন এক সামরিক অভিযান শুরু করতে প্রস্তুত। এই ঘোষণার পরই রাশিয়া ইউক্রেনে এই হামলা চালাতে শুরু করে।
গত শীতে রাশিয়া এক অভিযান চালিয়ে কোন সাফল্য পেতে ব্যর্থ হয়। এর মধ্যে কেবল বাখমুটেই তাদের দশ মাস ধরে লড়াই চালাতে হচ্ছে। এই শহরটি কৌশলগত-ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিবিসি বাংলা।