দেশের গণমাধ্যমও ফ্যাসিবাদের ভয়াল গ্রাসে আক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো একে একে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আমি যখন আপনাদের (সাংবাদিক) মধ্যে আসি তখন মনে হয় এখনো কিছু অবশিষ্ট আছে; কিন্তু আবার যখন পত্র-পত্রিকার দিকে তাকাই, চ্যানেলগুলোর কথা শুনি, তখন মনে হয় এখানেও সেই ভয়াল ফ্যাসিবাদের গ্রাসে আক্রান্ত। দেশের অবস্থাকে ‘ভয়াবহ’ অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজসহ পেশাজীবীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি সমর্থিত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) উদ্যোগে এ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
পরে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, আবদুল হাই শিকদার, এমএ আজিজ, কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনসহ সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন।
ইফতারপূর্ব বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আজকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। দিনকালসহ একের পর এক মিডিয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। এ সরকার যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে সেটা আগে কখনো ছিল না। সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের ক্ষেত্রে সেন্সর ও সেলফ সেন্সরশিপ করতে হয়। সবাই ভাবেন, এটা লেখা যাবে কি যাবে না। লিখলে আবার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা খেতে হবে কিনা। অনেক সাংবাদিক আছেন যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এখন পর্যন্ত মামলায় ঝুলছেন। আমি এবার জেলে গিয়ে দেখলাম যে, আমাদের অনেক যুবক তরুণ এমনকি অপরিণত বয়স্ক ছেলে যাদের বয়স ১৮ হয়নি তারাও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক হয়েছে, জেলের মধ্যে আছে।
তিনি বলেন, আজকে এমন একটা অবস্থা হয়েছে- সাংবাদিকরা এক হয়ে লড়াই করবে সেই সুযোগ রাখা হচ্ছে না। প্রেস ক্লাবে বিভাজন হয়েছে, সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে। সংসদে দাঁড়িয়ে এ গণবিচ্ছিন্ন সরকারের প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলেন, আমরা কল্পনাও করতে পারি না একটা সভ্য দেশের প্রধানমন্ত্রী এভাবে কথা বলতে পারেন।
ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাংবাদিক নেতা বাকের হোসেন, মোদাব্বের হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, ইলিয়াছ হোসেন, রাশেদুল হক, শিক্ষক নেতা শামসুল আলম প্রধান, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ।