বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শীতের চডা, ডিম বিক্রীতে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে ফিরোজা-চাঁন মিয়ার সংসারে

শীতের ডিম মিক্সড চডা কিংবা গরম গরম চডার সাথে সরিষা-কাঁচা মরিচ ভর্তা, আর হাফ বয়েল, ফুল বয়েল ডিম খেতে সন্ধ্যার পর থেকেই ভিড় বাড়ে পটুয়াখালীর কলাপাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে ফিরোজা-চাঁন মিয়ার ফুটপাতের শীতের পিঠার দোকানে। প্রতি পিচ চডা বিক্রী হয় এখানে ১০ টাকা দরে। তবে চডার সাথে ভর্তা ফ্রি। আর ডিম মিক্সড চডা বিক্রী হয় ৩০ টাকা দরে। হাফ বয়েল-ফুল বয়েল হাঁসের ডিম বিক্রী হয় ২০ টাকা দরে। শীতের সন্ধ্যার পরপরই ভিড় বাড়তে থাকে ফুটপাতের এ পিঠার দোকানে। শীত বাড়লে বিক্রীও বাড়ে। এভাবে প্রতিদিন গড়ে ২০০ হাফ বয়েল ডিম, ২৫০-৩০০ ফুল বয়েল ডিম, ৩০০-৪০০ চডা বিক্রী করেন ফিরোজা-চাঁন মিয়া। এভাবে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে তার পরিবারে।

শুক্রবার রাতে দেখা গেছে, ফিরোজা একের পর এক অর্ডারের ডিম মিক্সড চডা ভাজছেন আর চাঁন মিয়া শীতে জবুথবু হয়ে পিঠা খেতে আসা বেঞ্চিতে বসা কাষ্টমারদের গরম গরম পিঠা প্লেটে সরবরাহ করছেন। কেউ শুধু চডা, কেউ ভর্তা চডা, কেউ ডিম মিক্সড চডা, কেউ হাফ বয়েল ডিম, আবার কেউ ফুল বয়েল ডিম খাওয়ার অর্ডার করছেন। কাষ্টমারদের অর্ডার বাড়লে ব্যস্ততাও বাড়ে তাদের। তবে সিরিয়াল রক্ষা করেই বিক্রী হয় পিঠা। একসময় ব্যস্ততার ফাঁকে কথা হয় ফিরোজার সাথে।

ফিরোজা জানান, তাদের তিন মেয়ে, এক ছেলের সংসার। নিজেদের উপার্জিত অর্থে ভালো ভাবেই বিয়ে দিতে পেরেছেন তিন মেয়েকে। মেয়েদের সংসারে তাদের নাতি-নাতনীও আছে। ভালোই আছে মেয়েরা। ছেলের বেশীদূর আর পড়া এগোয়নি। ছেলে ইউনিলিভার কোম্পানীর বিপনন কর্মকর্তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন। শীতের পর তরকারী বাজারের ফুটপাতে সবজী কিংবা গ্রামীন এলাকা থেকে মৌসুমী ফল এনে বিক্রী করেন তারা। এভাবেই চলে তাদের সংসার। কারো কাছে কখনও সাহায্য চাইতে হয়নি তাদের। পরিশ্রম তাদের সংসার থেকে দারিদ্রতা হটিয়ে স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছে।

কথা হয় চাঁন মিয়ার সাথে। চাঁন মিয়া জানান, আগে একটু বেশী লাভ হতো। এখন সব কিছুর বাজার চড়া। প্রতি কেজি চালের গুড়ি এখন কিনতে হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা দরে। প্রতি পিচ হাঁসের ডিম ১৫-১৬ টাকা। সাথে পিয়াজ, কাঁচা মরিচ, শরিষা। সবকিছুই তো বাজার থেকে কিনতে হয়। এছাড়া রোজ অন্তত: ৭-৮ কেজি গ্যাস খরচ হয় সিলিন্ডার থেকে। একটি সিলিন্ডারে দুই মুখের চুলায় দুই দিন যায়না। অথচ ১৩ কেজির প্রতি সিলিন্ডার গ্যাস কিনতে হচ্ছে তাদের ১৩৫০ টাকা দরে। এরপর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে বসার জন্য লাইট বিল সহ তাদের দিতে হচ্ছে সপ্তাহে ৪০০ টাকা। আর কিছু পাতি নেতারা বাকী খেয়ে দেই, দিচ্ছি তো আছেই। তারপরও অধিক পরিশ্রমে লোকসান গুনতে হয়না। আল্লাহর কাছে হাজার শুকুর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ