জিতলেই কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর টিকিট নিশ্চিত। এমন সমীকরন নিয়ে গ্রুপ-জি’তে নিজেদের শেষ ম্যাচে সার্বিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ফিফা বিশ্বকাপের নক-আউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে সুইজারল্যান্ড। এর মাধ্যমে টানা তৃতীয়বারের মত শেষ ষোলোতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেঅ সুইসরা। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৮ আসরেও শেষ ষোলোতে খেলেছিলো সুইজারল্যান্ড।
গ্রুপ পর্বে ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করে সুইজারল্যান্ড। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৬ পয়েন্ট ব্রাজিলেরও। গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, রানার্স-আপ হলো সুইজারল্যান্ড। এই গ্রুপে শেষ ম্যাচে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ক্যামেরুন। তবে জিতেও গ্রুপ পর্ব থেকে বিশ^কাপ শেষ করলো ক্যামেরুন। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট তাদের। ১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শেষ দল সার্বিয়া।
দুই রাউন্ডের ম্যাচ শেষে সুইজারল্যান্ডের ছিলো ৩, সার্বিয়ার ছিল ১ পয়েন্ট। নক আউট পর্বে যেতে শেষ ম্যাচে জয় ও অন্য ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে ক্যামেরুনের হার দরকার পড়ে সার্বিয়ার। সুইজারল্যান্ডের দরকার অন্তত ড্র ও অন্য ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে ক্যামেরুনের হার। আর জিতলে অন্য কোন সমীকরনের প্রয়োজন নেই সুইসদের সামনে।
এ অবস্থায় দোহার ৯৭৪ স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই সার্বিয়াকে চাপে রাখে সুইজারল্যান্ড। সুইসদের চাপ সামলে দ্রুত আক্রমনে যায় সার্বিয়াও। এমন অবস্থায় ম্যাচের ২০ মিনিটে গোলের আনন্দে মাতে সুইজারল্যান্ড।
স্ট্রাইকার ডিজিব্রিল সো’র পাস থেকে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ-পায়ের শটে গোল করেন মিডফিল্ডার জিহার্দান শাকিরি। লিওনেল মেসি-ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে গোল করা তৃতীয় খেলোয়াড় শাকিরি।
তবে গোল হজম করেও থমকে যায়নি সার্বিয়া। ২৬ মিনিটে গোল পরিশোধ করে দেয় তারা। বাঁ-প্রান্ত দিয়ে স্ট্রাইকার ডুসান টাডিচের ক্রস থেকে দারুণ হেডে গোল করে দলকে ম্যাচে ফেরান আক্রমনভাগের আরেক খেলোয়াড় আলেক্সান্দার মিট্রোভিচ। এ নিয়ে নিজের খেলা শেষ ৭ ম্যাচে অষ্টম গোল করলেন মিট্রোভিচ।
ম্যাচে সমতা এনে আত্মবিশ^াস বেড়ে যায় সার্বিয়ার। আক্রমনের ধারা বাড়িয়ে ৩৫ মিনিটে লিড নেয় তারা। এবারও এই গোলের পেছনে বড় অবদান রাখেন দ্বিতীয় গোলের পথ তৈরি করা টাডিচ। তার পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ-পায়ের শটে গোল করেন স্ট্রাইকার ডুসান ভøাহোভিচ।
সার্বিয়ার লিডে প্রথমার্ধ শেষ হবার পথেই ছিলো। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ ভাগে গোল করে ম্যাচে ২-২ সমতা আনে সুইজারল্যান্ড। ডান-প্রান্ত দিয়ে আক্রমন শানিয়ে বক্সের ভেতর স্ট্রাইকার ব্রিল এমবোলোকে পাস দেন ডিফেন্ডার সিলভান উইডমার। বক্সের ভেতর থেকে দারুন শটে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে গোল করেন এমবোলো।
দুই দলেল দুর্দান্ত ফুটবল নৈপুন্যে ২-২ সমতায় শেষ হয় ম্যাচের প্রথমভাগ। এসময় বল দখলে সমান-সমান ছিলো দু’দল। গোলমুখে অন-টার্গেট শটেও প্রায় সমান ছিলো তারা। এ সময় সার্বিয়া ৪টি ও সুইসরা ৫টি শট নেয়।
সমতা নিয়ে বিরতির পর খেলতে নামার তৃতীয় মিনিটেই গোল পেয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। মধ্যমাঠ বল পেয়ে ডান-প্রান্তে থাকা মিডফিল্ডার রেমো ফ্রুলারকে পাস দেন স্ট্রাইকার রুবেন ভারগাস। তার পাস থেকে বল পেয়ে দারুন শটে গোল করেন ফ্রুলার। ৩-২ গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড।
এরপর যথাক্রমে ৫৭ ও ৫৯ মিনিটে আরও দু’বার আক্রমন করেও গোল করতে ব্যর্থ হয় সুইজারল্যান্ড। ৭২ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে সুইজারল্যান্ডের বক্সের ভেতর ক্রস করেন সার্বিয়ার মিডফিল্ডার নেমাঞ্জা মাকসিমোভিচ। উড়ে আসা বলে হেড নিয়েও গোল পাননি স্ট্রাইকার লুকা জোভিচ।
ম্যাচের বাকী সময় গোলের চেষ্টা করেও কোন দল গোল করতে পারেনি। এমনকি ইনজুরি সময়ে ১১ মিনিটও ছিল গোল শুন্য। শেষ পর্যন্ত দারুন জয়ে শেষ ষোলোর টিকিট পায় সুইজারল্যান্ড। অন্য দিকে ১৯৯৮ সালের পর তিন আসরে খেললেও শেষ ষোলোতে উঠতে পারেনি সার্বিয়া।