শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭১-এর পরাজিত শক্তির দোসর হিসেবে কাজ করেছেন প্রফেসর ইমতিয়াজ: ঢাবি শিক্ষক সমিতি

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদকে ৭১-এর পরাজিত শক্তির দোসর বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতি এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি দাবি জানায়। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. জিনাত হুদা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ও জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ, তার লেখা বই (শিরোনাম: হিস্টোরিসাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড স্টেট ভার্সেস পারসন)-এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চ ভাষণ শেষে ‘জয় বাংলা’র সাথে ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছেন বলে দাবি করেছেন (পৃ. ৮০)।

এছাড়াও একই বইয়ে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে অযথা বিতর্কের অবতারণা করেছেন (পৃ. ১৫ ও ১৬) ও ১৯৭১-এর গণহত্যার বিচার না হওয়ার পিছনে বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধু ও তার সরকারকে দায়ী করেছেন (পৃ. ১২, ১৩) এবং একাত্তরের গণহত্যার বিচারের ক্ষেত্রে ওই সময়ে বাঙালীদের দ্বারা বিহারীদের হত্যার বিচার করা উচিত বলে দাবি করেছেন (পৃ. ৮১-৮২)’।শিক্ষক সমিতি তার এই ন্যাকারজনক ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে ও গ্রন্থটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।

শিক্ষক সমিতি মনে করে, উপরোক্ত বিষয়গুলো ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয় ও একাডেমিকভাবে সুরাহা হয়েছে। এগুলো নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরির সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৭ই মার্চের ভাষণ যেটি তিনি সমাপ্ত করেছিলেন ‘জয় বাংলা’ বলে সেই ভাষণটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃত।’

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ‘জোনোসাইড স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ইমতিয়াজ আহমেদ যে ‘জয় পাকিস্তান’ শ্লোগানের কথা বলছেন তা একদিকে যেমন ইতিহাস বিকৃতির অকাট্য প্রমাণ ঠিক একইভাবে আন্তর্জাতিক পরিসরে স্বীকৃত ‘জয় বাংলা’ সম্বলিত বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটিকে চ্যালেঞ্জ করণের অপচেষ্টা।’

এতে আরো বলা হয়, ‘এদেশে একমাত্র ৭১-এর পরাজিত শক্তিই উপরোক্ত নিষ্পত্তিকৃত বিষয়সমূহ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিতর্কিত করা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা করে। প্রফেসর ইমতিয়াজ তার গ্রন্থে একই অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে ৭১-এর পরাজিত শক্তির দোসর হিসেবে কাজ করেছেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি তাকে অনতিবিলম্বে জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান ও তার গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ে পণ্ডিত শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি প্রণয়নের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছে।

একইসাথে শিক্ষক সমিতি প্রফেসর ইমতিয়াজ আহমেদের বই-এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে বলেও বিবৃতি উল্লেখ করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ