বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের আহবানে ১০ দফা দাবীতে সারা দেশের ন্যায় আমতলীতে নৌ-যান শ্রমিকদের কর্মবিরতি শুরু করেছে। রবিবার আমতলী লঞ্চঘাট থেকে কোন লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। এতে দূর্ভোগে পরেছে আমতলী-তালতলী-কলাপাড়া উপজেলা ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার ঢাকামুখী যাত্রীরা। নিরুপায় হয়ে যাত্রীরা সড়কপথে পরিবহনে ঢাকা যাচ্ছেন। তাতেও পরেছে তারা চরম দূর্ভোগে। অনেক যাত্রী ঢাকা না গিয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন।
এমভি তরঙ্গ লঞ্চের মাস্টার মোঃ মোফাম্মেল হোসেন বলেন, ২০১৬ সালে নৌ-যান শ্রমিকদের জন্য একটি গেজেট পাশ হয়েছে। ওই গেজেট অনুসারে কাউকে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। মালিক পক্ষ যে বেতন দিচ্ছেন তা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করতে হয়। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তিন দফা কর্মবিরতি দিয়েও দাবী বাস্তবায়ন হয়নি। যতদিন পর্যন্ত মালিক পক্ষ আমাদের দাবী না মেনে নিবেন ততদিন পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর একই দাবীতে কর্মবিরতি দিয়েছিলাম। দাবী মেনে নেয়ার আশ্বাসে কর্মবিরতি স্থগিত করেছি কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে গেলেও দাবী বাস্তবায়ন করেনি মালিক পক্ষ। ত্ইা বাধ্য হয়ে আবারো কর্মবিরতি দিয়েছি।
জানাগেছে, নৌ-পথে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, নৌ-যান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও কর্মস্থলে দূর্ঘটনায় মৃত নৌ-শ্রমিক পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণসহ ১০ দফা দাবী করে আসছিল বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ। মালিকপক্ষ এ দাবী দীর্ঘদিন ধরে মেনে নেয়নি। এ ১০ দফা দাবী আদায়ের লক্ষে ২৬ নভেম্বর দিবারাত থেকে নৌ-যান শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছে।
রোববার আমতলী লঞ্চঘাট থেকে কোন লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। ঢাকার উদ্দেশ্যে লঞ্চ না ছাড়ায় চরম দূর্ভোগে পরেছে আমতলী-তালতলী-কলাপাড়া উপজেলা ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার আসা যাত্রীরা। অনেক যাত্রী আমতলী লঞ্চঘাট এসে লঞ্চ না ছাড়ার কারনে বাড়ী ফিরে গেছেন।
চারটায় আমতলী লঞ্চঘাট ঘুরে দেখাগেছে, টার্মিনালে এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চ নোঙ্গর করে আছে। যাত্রীরা ঘাটে এসে লঞ্চ না ছাড়ার খবর পেয়ে হতাশ হয়ে বিকল্প পথ গাড়ীতে ঢাকায় যাচ্ছেন। আবার অনেকে বাড়ী ফিরে গেছেন।
তালতলী থেকে আসা যাত্রী লায়লা বেগম বলেন, ঢাকা যাওয়ার জন্য আমতলী লঞ্চঘাটে এসেছিলাম কিন্তু লঞ্চ ছাড়বে না তাই বিকল্প পথে ঢাকা যাওয়ার চিন্তা করছি।
যাত্রী সজিব মিয়া বলেন, রোগী নিয়ে লঞ্চে ঢাকা যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু লঞ্চ ছাড়বে না তাই ঢাকা যাওয়া হবে না। এখন বাড়ী ফিরে যাচ্ছি।
আমতলী উপজেলার নীলগঞ্জ গ্রামের রেহেনা, রাবেয়া, নাসিমা ও রাহিমা বলেন, ঢাকা যেতে লঞ্চঘাট এসেছিলাম কিন্তু লঞ্চ বন্ধ। তাই বাড়ী ফিরে যাচ্ছি।
তরঙ্গ-৭ লঞ্চ মালিক মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে নদী পথের অবস্থা শোচনীয়। যাত্রী সংঙ্কটে এমনিতেই লঞ্চ মালিকরা লোকসানে আছে। এ অবস্থায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি দিলেও তাদের দাবী মেনে নেয়া অসম্ভব।