ভারতের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) বলেছে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে ‘পাল্টা জবাব’ দেওয়ার পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) রাতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এনএসস ‘র বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পাকিস্তানের শীর্ষ নিরাপত্তাবিষয়ক এই কমিটি বলেছে, ভারতের হামলার জবাবে “যথাযথ স্থান ও সময়ে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে” ইসলামাবাদ। একই সঙ্গে আত্মরক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় সামরিক পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের বরাত দিয়ে NSC-এর বিবৃতিতে বলা হয়, “নিরীহ পাকিস্তানিদের প্রাণহানি এবং পাকিস্তানের ভূখণ্ডে নগ্ন আগ্রাসনের প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার রয়েছে আমাদের।” এতে আরও বলা হয়, “পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
ভারতের হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এনএসসি বলেছে, “সমগ্র জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা, ত্যাগ এবং মাতৃভূমির প্রতিরক্ষায় সময়োপযোগী পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।”
ভারতীয় সামরিক বাহিনী বুধবার রাত ১২টার পর পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে ২৫ মিনিটে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে বলে দাবি করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ২৬।
এই ঘটনার পর থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে টানা গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে কমপক্ষে ১০ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, পাল্টা প্রতিরোধে তারা ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারতীয় কর্মকর্তারা তিনটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধাবস্থার মতো উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটি নির্ভর করছে পরবর্তী কূটনৈতিক এবং সামরিক পদক্ষেপের ওপর।