প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে এবং সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে এর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, “শত্রুদের মুখে ছাই দিয়েই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।”
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়েছে।
মা ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার হার বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে এমন কোনো খাত নেই যা পিছিয়ে আছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে কোভিড-১৯ অতিমারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করেও বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক শক্তি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে এবং ২০২৬ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর অবশ্যই ঘটবে।”
তিনি বলেন, “জনগণই আওয়ামী লীগের একমাত্র শক্তি।”
তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনে জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে বিএনপি ভোট কারচুপি ও দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের সূচনা করেছে তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের শিক্ষা নেওয়া খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কেননা আওয়ামী লীগ এমন একটি দল যারা দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছে এবং দলের অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়ে গেছেন।
‘আওয়ামী লীগের শাসনামলে ব্যাপক উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব মঞ্চে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সমৃদ্ধির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর জন্য তথাকথিত রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের কঠোর সমালোচনা করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও কাজী জাফরউল্লাহ এবং সিনিয়র সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তাঁরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে প্রমাণ করেছে বাংলাদেশও পারে।
তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছরে আমরা পদ্মা সেতু থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সব অগ্রযাত্রা থমকে গিয়েছিল।
২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন ও মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ শুরু করে আওয়ামী লীগ।
দেশের সার্বিক উন্নয়নে তাঁর সরকার তৃণমূলের জনগণকে অগ্রাধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কারণে গ্রাম পর্যায় থেকে দারিদ্র্য শহরাঞ্চলে তুলনামূলক ভাবে বেড়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির সংস্কৃতি চালু করেছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতার প্রতিবাদ করায় শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনরত ছাত্র ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হামলার তীব্র সমালোচনা করেন এবং বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ সম্পূর্ণভাবে মানবতার লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, “যারা বাংলাদেশে মানবতা খুঁজে বেড়ায়, তারা এখন কী বলবে? আমি উত্তর চাই।”
যুক্তরাষ্ট্রে দুই বাংলাদেশিকে হত্যার নিন্দাও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের দুই বাঙালিকে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তা কর্মীদের দ্বারা) হত্যার প্রতিবাদ করছি।