শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংবিধান সংশোধন করার আপনারা কে ? মির্জা আব্বাস

বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দেশের মানুষের শান্তি ও স্বস্তির জন্য অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ ঘোষণা করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সাবু’র ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’ ও ‘প্রজন্ম একাডেমি’ যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

এ আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

মির্জা আব্বাস অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা রাষ্ট্র কাঠামোর কী – কী সংস্কার করতে চান এবং সেটা করতে কতদিন লাগবে? জাতিকে অন্ধকারে রেখে আপনারা যা খুশি তাই করবেন, আমরা তো সেটা মেনে নিতে পারবো না। জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখবেন না।’

তিনি অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে সংস্কারের কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। নির্বাচন নিয়ে আপনারা কোনো কথা বলছেন না। আমরা নির্বাচনের কথা বললেই আপনারা বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমরা উদগ্রীব হয়ে পড়েছি। এখন আমরা যদি বলি, আপনারা নির্বাচনের কথা না বলে ক্ষমতায় থাকার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। তাই বলবো, কোনো রকম ছলচাতুরী করবেন না। জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখবেন না। কারণ, দেশের মানুষ তামাশা দেখবে-এমনটা কখনোই হবে না।’

‘আজকে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে’ এ কথা উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সামনে আরো ঘোলাটে হতে যাচ্ছে। তাই আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এই সরকার অবশ্যই জাতিকে একটা আশার আলো দেখাবে। তবে, আপনারা এমন কিছু করবেন না, যাতে জাতি আপনাদের ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।’

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে আরো বলেন ‘সংবিধান সংশোধন করার আপনারা কে? আপনারা কী পার্লামেন্ট ছাড়াই সংবিধান সংশোধন করে ফেলবেন? মনে রাখতে হবে, সংবিধান কোনো রাফ খাতা নয় যে, যা খুশি তাই করবেন। সংবিধান সংশোধন কিংবা পুনর্লিখন করতে হলে, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন, যারা স্টেকহোল্ডার রয়েছেন-তাদের সাথে আলোচনা করে তা করতে হবে।’

মির্জা আব্বাস উল্লেখ করেন, তিন মাস হলো অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু এখনো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি’র অনেক নেতা-কর্মীরই মামলা প্রত্যাহার হয়নি। তিনি বলেন, ‘এই সরকার একটা অর্ডিন্যান্স জারি করে ২০০৭ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন পর্যন্ত বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যত মামলা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করে নিতে পারে। কিন্তু সেটা করছে না।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশে বর্তমানে একটা ধোঁয়াশাচ্ছন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই সরকার বেশি সময় থাকবে, না যথাসময়ে দায়িত্ব পালন করে চলে যাবে-বুঝতে পারছি না। আপনারা আমাদের সহযোগিতা চান কিনা, সেটাও বুঝতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল, তাদের রক্তের ফসল। এই সরকারের কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশা, তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।’

গয়েশ্বর রায় উল্লেখ করেন, সরকার এই দায়িত্ব¡ সঠিকভাবে পালন করলে, ইতিহাসে তারা উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন, ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করবে তাদের নাম।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন। প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম কলিমের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, প্রয়াত সাবুর সহধর্মিণী হোসনে আরা বেগম রিনা, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম মিজানুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপি’র তথ্য সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ