সোমবার, ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শেষ ওভারের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ঢাকার জয়

শেষ ওভারে জয়ের জন্য সিলেটের প্রয়োজন ছিল ২৩ রান, হাতে ৫ উইকেট। সেট ব্যাটার আরিফুলের সঙ্গে উইকেটে ছিলেন সামিউল্লাহ শিনওয়ারি। বোলিংয়ে মুস্তাফিজুর রহমান। দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে বোলিংয়ে এসে প্রথম দুইটা বল একদমই ভালো করতে পারলেন না মুস্তাফিজ। লাইন-লেন্থ হারিয়ে ওভারের প্রথম দুই বলেই ছক্কা এবং চার খান তারকা পেসার। একটা বল হয় ওয়াইড। তাতে শেষ ৪ বলে সিলেটের লক্ষ্য গিয়ে দাঁড়ায় ১২ রানে। তবে সেই ১২ রান আর নিতে দেননি মুস্তাফিজ। শেষ ৪ বলে ৫ রান দিয়ে রুদ্ধশ্বাস এক জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিলেট স্ত্রাইকার্সকে ৬ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস।

শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৯৬ রান করে ঢাকা। জবাব দিতে নেমে ৭ উইকেটে ১৯০ রানে থামে সিলেটের ইনিংস।

বড় লক্ষ্যতাড়ায় নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি সিলেটের। দলীয় ১১ রানে জর্জ মানসির উইকেট হারানোর পর ৩২ রানের মাথায় ইনফর্ম ব্যাটার জাকির হাসানের উইকেট হারায় দলটি। ওভারপ্রতি ১০ রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লে শেষে কেবল ৩৭ রান করতে পারে আরিফুল হকের দল।

পাওয়ারপ্লের পর হাল ধরেন অ্যারন জোন্স এবং রনি তালুকদার। ৮০ রানের জুটি গড়ে দলকে ম্যাচে ফেরান তারা। তবে রানের চাপটা ততক্ষণে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।

৩২ বলে ৩৬ রান করে রনি যখন বিদায় নেন, তখন দলের প্রয়োজন ৩৭ বলে ৮৫ রান। পরের ওভারে আউট হন আরেক সেট ব্যাটার রনি তালুকদারও।

৪৪ বলে ৬৮ রান করে রনির বিদায়ের সময় সিলেটের প্রয়োজন ৩৩ বলে ৭০ রান। অর্থাৎ ওভারপ্রতি ১৪ রানেরঅ বেশি। প্রায় অসম্ভব এই লক্ষ্যতাড়ায়ও পিছপা হয়নি সিলেট। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে গিয়েছেন আরিফুল হক এবং জাকের আলী।

পঞ্চম উইকেটে আরিফুল এবং জাকের মিলে ১৯ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন। ১৩ বলে ২৮ রান করে ১৯তম ওভারে আউট হন জাকের। তবে দলকে বিপদ থেকে রক্ষা করে যেতে পারেননি জাকের। তার বিদায়ের সময় ৮ বলে ২৮ রান দরকার ছিল দলের। আরিফুল হক এবং সামিউল্লাহ শেনওয়ারি বেশ লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত এই হিসাব আর মেলাতে পারেননি।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া ঢাকা ক্যাপিটালস তানজিদ তামিম-লিটন দাসের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো সূচনা পায়। ২৮ রান যোগ করা এই জুটি চতুর্থ ওভারে ভাঙে তানজিদ তামিমের বিদায়ে। ১৬ বলে ১ চার ও ২ ছয়ে ২২ রান করে এই বাঁহাতি টিপু সুলতানের শিকারে পরণত হন।

লিটনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫৩ রান তোলে ঢাকা। কিন্তু পাওয়ার প্লে শেষ হতেই জেপি কোতজে বিদায় নেন। সামিউল্লাহ শেনওয়ারি তাকে ৯ রানে ফেরান।

মোসাদ্দেকও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ৭ বলে ৪ রান করে শেনওয়ারির বলেই আউট হন তিনি।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৩৮ বলে ৪২ রান যোগ করেন লিটন-সাব্বির জুটি। ২১ বলে ২ ছয়ে ২৪ রান করে সাব্বির বিদায় নেন।

এরপর থিসারা পেরেরার সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন লিটন। ঝড়ের বেগে রান আসতে থাকে। ২১ বলে ৮১ রান যোগ করেন তারা। লিটন পান অর্ধশতকের দেখা।

রুয়েল মিয়ার ওভারে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৭০ রান করেন লিটন।১৯তম ওভারে ফেরেন লিটন।

শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে দুইশ রানের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। কিন্তু পরের বলেই তাকে ফেরান সুমন খান। আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ৩টি করে চার ও ছয়ে ৩৭ রান করেন পেরেরা। শেষ চার বলে আরও পাঁচ রান যোগ করেন ফরমানউল্লাহ (৪) এবং মুকিদুল ইসলাম।

সিলেটের পক্ষে ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন টিপু সুলতান। এক রান বেশি দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারিও। এছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন সুমন খান ও রুয়েল মিয়া।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ