রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম আজ শনিবার (৩ আগস্ট) ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘোষণা দেন।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন নাহিদ। তিনি বলেন, একদিকে নির্যাতন নিপীড়ন অপরদিকে সংলাপের আহ্বান জানানো হচ্ছে। আজকে কুমিল্লাতে হামলা করা হয়েছে আমার ভাই শহীদ হয়েছে। আমরা শহীদ হইতে ভয় পাই না। আজকে আমরা জানি জনগণের দাবি কী। জনগণের দাবি আমাদের আর বলার প্রয়োজন নাই। সবাই জানে…দফা এক দাবি এক। এক দফা এক দাবি। আজকে আমাদের জন্য এ জনগণ নেমেছিল জনগণকে মুক্ত করতে আমরা এখানে এসেছি। আজকে এক দফার দাবিতে আমরা এখানে হাজির হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা জীবনের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এক দফার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এ জায়গায়ও এক মিনিটও ক্ষমতায় থাকার অধিকার থাকে না। শেখ হাসিনা গণভবনের দরজা খোলা আছে। আমরা সাধুবাদ জানাই, তিনি আগে বুঝতে পেরেছেন গণভবনের দরজা খোলা রাখতে হবে। কারণ তার যাওয়ার সময় হয়েছে। আপনি দরজা খুলে অপেক্ষা করুন আমরা আপনাকে উৎখাত করার জন্য আসব।
নাহিদ বলেন, শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করলেই হবে না খুন দুর্নীতি লুটপাটের বিচারও হতে হবে। তাকে পদত্যাগ করতে হবে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধু শেখ হাসিনা নয় পুরো মন্ত্রী পরিষদও পদত্যাগ করতে হবে। এই ফ্যাসিবাদী শাসনব্যাবস্থা বিলোপ করতে হবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে চাই যেখানে আর কখনও কোনো ধরনের ফ্যাসিজম স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসবে না। শেখ হাসিনা এবং এ সরকারের লুটপাট দুর্নীতি এবং গণহত্যার বিচার করা। আগের সকল হত্যা গুম নিপীড়নেরও বিচার করা হবে। সকল রাজবন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমর প্রয়োজনে জেলমুক্তি করে আমাদের ভাইদের নিয়ে আসব।
তিনি এ সময় বলেন, জনগণকে আহ্বান করছি স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে যোগ দিন। পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় সংগঠিত হন। আমরা খুব দ্রুতই বৈষম্যবিরোধীছাত্র আন্দোলন থেকে ছাত্র নাগরিক অভ্যত্থানের জন্য নাগরিক ছাত্রসংগঠন এবং পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে মিলে সম্মিলিত মোর্চা ঘোষণা দিব। আমরা আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা আমরা খুব শীঘ্রই হাজির করব।
‘সবার প্রতি আহ্বান থাকবে আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে অসহযোগ এবং রাজপথের কর্মসূচি পালন করবেন জনগণকে উদ্বুদ্ধু করবেন। নিরাপত্তা বাহিনবী সেনাবাহিনী সরকারি কর্মকর্তা সবার কাছে আহ্বান থাকবে জনগণ যদি সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে সরকারি যদি জনগণের বিপক্ষে দাঁড়ায়। সে সরকারের হুকুম মানতে আপনারা বাধ্য নন। আমরা আমদের মিছিলে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা এই বাংলার মাটিতে সকল গণহত্যার বিচার করব। আমরা একদফার সরকার এবং ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিলোপ ঘোষণা করছি। এ জন্য ছাত্র নাগরিকের অভ্যুত্থান আহ্বান করছি। আগামীকাল থেকে অসহযোগ কর্মসূচি পালিত হবে।
এ দাবি আদায়ে আগামীকাল রোববার থেকে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।