রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত কি না, তা পর্যালোচনা করতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) একটি দল কাজ শুরু করেছে। এটি তাদের মূল পর্যবেক্ষণ শুরুর আগের একটি পর্যায়, যা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রয়োজন হবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
রোববার (৯ মার্চ) থেকে বাংলাদেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা শুরু করেছে আইএইএ। দলটি আগামী ১৩ মার্চ পর্যন্ত প্রকল্প এলাকার প্রতিটি প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবে।
জানা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা বিশেষজ্ঞ ইউরি মার্টিনেনকোর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলটি শনিবার (৮ মার্চ) রাতে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়। রোববার সকাল থেকেই তারা কেন্দ্রের কাঠামোগত, প্রযুক্তিগত ও যন্ত্রপাতি প্রস্তুতির পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. জাহেদুল হাসান বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য ধাপে ধাপে পরীক্ষা করতে হয়। প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করার পরই পরবর্তী ধাপে যেতে হয়।
তিনি বলেন, আমরা ইউনিট-১ এর কাঠামোগত ও যন্ত্রপাতি সংক্রান্ত কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে এটি চালু করার চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে রয়েছি। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি এবং আইএইএ এটি পর্যবেক্ষণ করছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর নির্মাণ ও ইনস্টলেশন কাজ প্রায় সম্পন্ন হলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হতে এখনো বেশকিছু সময় লাগবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর জন্য সম্পূর্ণ গ্রিড সংযোগ প্রস্তুত করা জরুরি, যা এখনও সম্পন্ন হয়নি।
ড. জাহেদ বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের আগে বিদ্যুৎ লাইন ও সংযোগব্যবস্থা পরীক্ষা করতে হবে। এটি শেষ করতে প্রায় দুই মাস সময় লাগবে। এরপর জ্বালানি লোড ও রিঅ্যাক্টরে ফুয়েল অ্যাসেম্বলি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও তিন মাস লাগবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুইটি ইউনিট থেকে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পের কাজ চলছে।
করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দুই বছরেরও বেশি দেরি হয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর এবং ইউনিট-২ চালু হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে। সম্পূর্ণ প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর।