বৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাস্তা বন্ধ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের আলোচনা হয়নি: মার্কিন দূতাবাস

আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার ঢাকায় প্রবেশের রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।

রোববার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।

বিবৃতিতে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র গণমাধ্যমকে জানান, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বিএনপির আগামী ২৮ অক্টোবর সড়ক বন্ধ করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং হস্তক্ষেপমুক্ত অংশগ্রহণের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

এদিকে রোববার দুপুরে সচিবালয় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার ঢাকায় প্রবেশের রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না, তা জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

তিনি বলেন, বৈঠকে পিটার হাস জানতে চেয়েছেন বিএনপি যে একটি বিরাট কর্মসূচি দিয়েছে সেখানে অনেক লোক নিয়ে আসবে, তোমরা রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না, কিংবা তোমরা অন্য কিছু করবা কি না।

মন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি ওই ধরনের কোনো প্রোগ্রাম আমাদের নেই। আমরা মনে করি, তারা যে রাজনৈতিক এজেন্ডা দিয়েছে, তারা তা শান্তিপূর্ণভাবে করবে। কর্মসূচি যদি তারা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে, তবে আমাদের কিছু বলার নেই। তারপরও আমরা অনুরোধ করব ঢাকা শহর এমনিতেই একটি যানজটপূর্ণ শহর। এখানে ২ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে, এমনকি ঢাকার রাস্তাঘাট মানুষে পূর্ণ থাকে। সেখানে যদি ১০ লাখ মানুষ বা এর চেয়ে বেশি লোক ঢোকে তারা যেটা বলেছেন, তাহলে তো একটা মিসম্যাচ হয়ে যাবে, কমিউনিকেশন, এটা-সেটা। সেগুলো যেন তারা না করে, সেটার জন্য আমরা রিকোয়েস্ট করব।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, তিনি (রাষ্ট্রদূত) জানতে চেয়েছিলেন যে আসা-যাওয়া তোমরা বন্ধ করবে কি না। আমি বলেছি আসা-যাওয়া বন্ধ আমরা কেন করব? ঢাকা আসা তো সবারই প্রয়োজন, একটা রোগীর ঢাকা আসা প্রয়োজন, বিদেশে যেতে হলে ঢাকায় আসা প্রয়োজন- সবকিছু তো ঢাকা কেন্দ্রিক। কাজেই আসা-যাওয়া বন্ধ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। তারা (বিএনপির নেতাকর্মী) আসবে তারা যাবে, সেখানে আমরা কোনো বাধা দেব না, কিংবা আমরা সেটার কোনো চিন্তাও করছি না। আমরা শুধু এটুকুই বলব, তারা যেন কোনো ভায়োলেন্স (সহিংসতায়) লিপ্ত না হয়, চলাচলের জায়গাটি তারা যেন সচল রাখে। এটুকুই আমাদের রিকোয়েস্ট, সেটা আমরা তাকে জানিয়েও দিয়েছি।

একটি দেশের রাষ্ট্রদূত একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচী নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে এসেছেন। এটি কূটনীতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই প্রশ্নটি তো আমি আপনার কাছে করতে চাই। আমার কথা হলো, তিনি এসেছেন, তিনি একটি দেশের রাষ্ট্রদূত, তিনি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, আমরা উত্তর দিয়েছি। এটা করতে পারে কি পারে না- সেটা দেখা আমার বিষয় নয়। সেটার জন্য আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় আছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে। আপনার (সাংবাদিক) কাছে আমারও প্রশ্ন। এসব ব্যাপারে বোধ হয় কিছুটা সংযমী হওয়া উচিত।

শিষ্টাচার নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তথ্য যতটুকু দেওয়ার আমরা ততটুকুই দিয়েছি। একটা রাষ্ট্রদূত আমাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছেন, জিজ্ঞাসা আমাকে করতেই পারেন। কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, কোনো ভায়োলেন্স (সহিংসতা) হবে কি না? সেই জায়গায় আমরা সেইটুকুই মেনটেইন করেছি। যতখানি প্রয়োজন ততটুকুই আমরা (তথ্য) দিয়েছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ