বুধবার, ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর হাসপাতালে সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

নোয়াখালীতে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৩ই জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত আব্দুর রহমান (৩৩) জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের হীরাপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মাওলানা সাইদুল হকের ছেলে। তিনি সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ আব্দুর রহমান ও হাবিবুর রহমান (২৫) নামে দুই যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাৎক্ষণিক তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুর রহমান মারা যান। দু’জনের শরীরে জখম ছিল। কিন্তু তাদের শরীরে গুরুতর কাটাছেঁড়া কিছু ছিল না। হাবিবুর রহমানের অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নয়।

নিহত আবদুর রহমানের চাচা মো. হানিফ অভিযোগ করে বলেন, সোমবার ভোররাতের দিকে যৌথবাহিনী হাওলাদার বাড়িতে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে আমার ভাতিজা আব্দুর রহমান ও একই বাড়ির আরেক ভাতিজা হাবিবুর রহমানকে তাদের ঘর থেকে আটক করে যৌথবাহিনী। আটকের পর তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে মারধর করা হয়। এরপর সকালে স্থানীয় পশ্চিমপাড়া বাবুলের দোকানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তাদের কাছ থেকে কার্তুজ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে জানানো হয়। এরপর সকাল আটটা-নয়টার দিকে তাদের সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়।

হানিফ জানান, থানায় গিয়ে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পান। তখন তারা পুলিশকে অনুরোধ করেন তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। তখন পুলিশ জানায়, আদালতে পাঠানোর পর আদালতে আবেদন করলে সেখান থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, সারা দিন থানা থেকে তার ভাই ও ভাতিজাকে আদালতে না পাঠিয়ে পাঠানো হয় বিকাল ৫টায়। আদালতে তাদের উপস্থাপনের পর গ্রহণ না করে আগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বললে পুলিশ তাদের বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তির পর কিছুক্ষণ পর তার ভাই আবদুর রহমান মারা যান। এলাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ করতে পারবে না।

সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম মানবজমিনকে বলেন, সকালে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। তখন তাদের মারধরের ঘটনা ঘটেনি। যখন তাদের পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয় তখন তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। তখন তাদের স্থানীয় বজরা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মারামারির ঘটনায় দায়ের হওয়া পূর্বের ৩টি মামলা রয়েছে। আর হাবিবের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নাই। তাদের কাছ থেকে রাইফেলের লম্বা দু’টি গুলি ও ৩টি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি জানান, নিহত যুবকের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মঙ্গলবার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানাজা অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা ও পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখা হয়।

তারা বলেন, তাকে নির্যাতনের সময় নেতাকে বার বার ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ইচ্ছা করলে তিনি তাকে বাঁচাতে পারতেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ