গত ২৮ মার্চ ২০২৫ তারিখ স্থানীয় সময় ১২৫০ মিনিটে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ৭.৭ মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ ভূমিকম্পে মিয়ানমারে অদ্যাবধি কমপক্ষে ১,৬৪৪ জন নিহত এবং ৩,৪০৮ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়। মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ভূমিকম্পের ফলে খাদ্য, পানি ও বাসস্থান সংকট এবং জরুরী চিকিৎসার অভাবে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের এই মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত মর্মাহত।
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে, বাংলাদেশ হতে মিয়ানমারে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে ঔষধ, তাঁবু, শুকনা খাবার এবং উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য উদ্ধারকারী ও চিকিৎসা সহায়তা দল প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে আজ ৩০ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর দুইটি পরিবহন বিমান জরুরী ত্রাণ সামগ্রীসহ মিয়ানমারের ইয়াংগুন এর উদেশ্যে রওনা করেছে এবং ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর শেষে প্রত্যাবর্তন করবে।
আজকে পাঠানো ১৬.৫০ টন ত্রাণ সহায়তার মধ্যে রয়েছে শুকনো রেশন, বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যলাইন, তাঁবু, হাইজিন প্রোডাক্টসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী।
এখানে উল্লেখ্য যে, আজ যে ত্রাণসামগ্রী মিয়ানমারে পাঠানো হচ্ছে তা’ পরিকল্পিত ত্রাণ সহায়তার একটি অংশমাত্র। পরবর্তীতে, মিয়ানমার সরকারের অনুমতি প্রাপ্তি সাপেক্ষে আরো ত্রাণ সহায়তা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে উদ্ধারকারী ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দল পাঠানো হবে। উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ২৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স হতে ১০ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়াও, চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে ১০ সদস্য এবং অসামরিক ডাক্তারদের সমন্বয়ে ১১ সদস্যের দুইটি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রেরিত এই মানবিক সহায়তা মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের দূর্ভোগ কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনগুলোতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বৈশ্বিক যে কোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আত্মনিয়োগের জন্য সদা অঙ্গীকারবদ্ধ।