ঘোষণাপত্র নয় মঙ্গলবার ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ পালন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে রাজধানীর বাংলামোটরে আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক শেষে এ কথা জানান আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল।
আরিফ সোহেল বলেন, জুলাই-আগস্টে সংগঠিত গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আবির্ভূত জনআকাঙ্ক্ষা তথা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েমের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ এক ঐতিহাসিক পটভূমিতে আবির্ভূত হয়েছে। হাজারো শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি ও জনআকাঙ্ক্ষার দলিলস্বরূপ ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র’ অত্যাবশ্যক ছিল। এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ঐতিহাসিক দায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর বর্তায়। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পক্ষে এই ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্রের প্রণয়ন ও ঘোষণার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত ও ইতিবাচক সাড়া সঞ্চারিত হয়েছে। এমতাবস্থায় ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান- আপনারা যে উদ্দীপনায় সংগঠিত হয়েছেন, তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আগামীকালের কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবেন।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেবেন। সংগঠনের নেতারা ঘোষণাপত্রে দুটি মৌলিক বিষয়ের উল্লেখ করেন। তাতে ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ‘মুজিববাদী সংবিধান’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এর ‘কবর’ রচনা করা এবং ‘নাৎসিবাদী আওয়ামী লীগকে’ বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করার কথা থাকবে।
এ নিয়ে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দিনভর রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনার মধ্যে রাত পৌনে ৯টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হবে।
সরকারের এ ঘোষণার পর মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে রাজধানীর বাংলা মোটরে বৈঠকে বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা।
বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। সেখানে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে শহীদ মিনারে তাদের পক্ষ থেকে ‘প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভোলিউশন’ আসার কথা ছিল।