সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফর শুরু আজ

যুক্তরাষ্ট্রের সিভিলিয়ান সিকিউরিটি, ডেমোক্রেসি ও হিউম্যান রাইটসবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফর শুরু হচ্ছে আজ। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি উজরা জেয়ার সঙ্গে বৈঠকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার তুলে ধরবে সরকার। উজরা জেয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল চার দিনের সফরে আজ মঙ্গলবার ঢাকায় আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অঞ্জলী কৌরও থাকছেন এই দলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, উজরা জেয়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা।

ঢাকায় তাঁর মূল বৈঠক হবে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গেও বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর বৈঠক হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে কক্সবাজারে যাবেন।

সফর শেষে প্রতিনিধিদলটি শুক্রবার বাংলাদেশ ছাড়বে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, আন্ডারসেক্রেটারি উজরা জেয়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, শ্রম ইস্যু, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবপাচার মোকাবেলাসহ অভিন্ন মানবিক উদ্বেগগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শ্রমিক নেতাসহ কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করবে। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় রোহিঙ্গা, মানবপাচার, শ্রম পরিস্থিতি, বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, নির্বাচন, বাকস্বাধীনতাসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিনিধিদলের সফর নিয়ে রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা আছে। এর অন্যতম বড় কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। যুক্তরাষ্ট্র গত মে মাসে বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণা করে। ওই নীতি অনুযায়ী, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দেওয়া ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য বিবেচিত হতে পারেন।

ভিসানীতি ঘোষণার পর দেশটি থেকে এখন পর্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের এটিই প্রথম সফর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নেওয়া উদ্যোগগুলো বৈঠকে তুলে ধরা হবে। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে আলোচনা উঠলে আগামী নির্বাচন সহিংসতামুক্ত রাখতে র‌্যাবের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হতে পারে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশ তার অগ্রগতি জানাবে। যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই অগ্রগতিকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় বাংলাদেশ তার হতাশার কথাও জানাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনের সময় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার বিষয়টি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী—দুজনের সঙ্গে আলোচনায়ই গুরুত্ব পেতে পারে মানবাধিকার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন প্রণয়নসহ সরকারের নেওয়া উদ্যোগগুলো বৈঠকে তুলে ধরার প্রস্তুতি রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধ ও আইন সংশোধনের উদ্যোগও তুলে ধরা হতে পারে বৈঠকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে মার্কিন কম্পানি এক্সন মবিলের জোরালো আগ্রহ রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ