বাংলাদেশে মানবাধিকারের বিশাল উন্নতি হয়েছে বলে বাংলাদেশ সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু স্বীকার করে গেছেন। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা জানিয়েছেন।
বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনা মো. হাশিমের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা জানান। এর আগে গত ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন ডোলাল্ড লু।
আইনমন্ত্রী বলেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র সফরকে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তিনি কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন কোন দিকে যাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। সেখানে মানবাধিকার প্রসঙ্গও ছিল। আমাকে ডোনাল্ড লু বলেছেন, মানবাধিকারের দিক থেকে বাংলাদেশে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কখনো কারো সম্পর্কে ভালো লেখে না। কিন্তু বাংলাদেশের মানবাধিকারের উন্নতি হয়েছে বলে তারা নিজেদের প্রতিবেদনে লিখেছেন।
‘লু বলেছেন, আমরা র্যাবের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা হয়ত দিতাম। কিন্তু আমরা দেখেছি, র্যাব অনেক ভালো কাজ করেছে। আমরা বুঝি র্যাবেরও প্রয়োজনীয়তা আছে। এই যে মানবাধিকারের বিশাল উন্নতি, এই কারণে বাংলাদেশকে আর নিষেধাজ্ঞা দিইনি।’ তিনি এ কথা আমাকে পরিষ্কার করে বলেছেন বলে যোগ করেন আইনমন্ত্রী।
র্যাবের বিরুদ্ধে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা কবে তোলা হবে, তা বলেছেন কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলিনি। তার কারণ হচ্ছে, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা তোলার ক্ষেত্রে একটি আইনি পদ্ধতি আছে। আমরা সেই পদ্ধতি অনুসারে এগোচ্ছি। সেই অনুসারে র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
র্যাব সংস্কারের সুপারিশ তিনি করেছেন কি না-এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, দেখুন, সংস্কারের সুপারিশ আসুক আর না আসুক, র্যাবের কোনো সদস্য অন্যায়, অপরাধ বা ভুল করলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটি আস্তে আস্তে হয়ে থাকে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কেমন হতে হবে, তা নিয়ে কোনো কথা বলেননি ডোনাল্ড লু। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ কেন চায়, সেটি তিনি আমাকে বলেছেন। গণতন্ত্র উত্তরণের যে পদ্ধতি, তা বাংলাদেশে ভালোভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
‘ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে সর্বশেষ কথায় আমার একটি দাবির কথা বলেছি, সেটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে হবে। তখন তিনি আমাকে বলেছেন, পররাষ্ট্র দপ্তর এ বিষয়ে সম্পূর্ণ সহানুভূতিশীল। তারাও চায় তাকে ফেরত দিতে। কিন্তু ব্যাপারটি বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে ডোনাল্ড লু আমাকে বিচার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত আনতে যতগুলো দরজায় নক করা দরকার, সেটি আমি করব।’
রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হচ্ছে, সাংবিধানিকভাবে এটি পূরণ হবে। সেখানে বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে স্পিকারের নামও আসছে। সেই পদ খালি হলে আপনাকে স্পিকার হিসেবে দেখা যাবে কি না- জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘আমি এমন কিছু শুনিনি। এসব কিছু স্পেকুলেশন ও রিউমার। এগুলো হতেই থাকবে। রাষ্ট্রপতি পদ খালি হওয়ার ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে। সেটাও আপনারা দেখতে পারবেন। বেশি দিনের জন্য তো অপেক্ষা না। খুব শিগগিরই দেখতে পাবেন কে নতুন রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন।