রবিবার, ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় মোটর সাইকেল চালককে কুপিয়ে হত্যা

মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁনকে (২২) মাদক বিক্রেতা শহীদ সিকদার, তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিদ সিকদার কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা পুরাতন বাজার এলাকায় শনিবার রাত নয়টার দিকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।

তালতলী থানার ওসি মোঃ শাহ জালাল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত আছে। নিহতরে মরদেহ আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।

জানাগেছে, তালতলী উপজেলার পচাকোড়িয়া ইউনিয়নের কলা রং গ্রামের শহীদ সিকাদার, তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিত সিকদার দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রি করে আসছে। গত বৃহস্পতিবার শহীদ সিকদারের ছেলে সোহেল সিকদার ও আরাফাত সিকদার কচুপাত্রা বাজারে মাদক বিক্রি করতে আসে। এতে মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁন বাঁধা দেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্ধ হয়।

শনিবার রাত নয়টার মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁন প্রতিবেশী হাবিব উল্লাহকে নিয়ে কচুপাত্রা পুরাতন বাজারে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ওত পেতে থাকা মাদক বিক্রেতা শহীদ সিকদার, তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিদ সিকদারসহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসী আরাফাত খানের মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। পরে মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

এ ঘটনা স্থানীয় অর্ধ শতাধিক লোকজন প্রত্যক্ষ করে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের ভয়ে তারা আরাফাতকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। আরাফাতকে কুপিয়ে তারা বীরদর্পে চলে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় মোটর সাইলেকের থাকা তার প্রতিবেশী হাবিব উল্লাহ গুরুতর জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁনকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। অপর আহত হাবিব উল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খানকে কলা রং গ্রামের শহীদ সিকদার ও তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা রায়েজিদ সিকদারসহ ১০-১২ জনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

আহত হাবিব উল্লাহর বাবা ইলিয়াস হাওলাদার বলেন, কলা রং গ্রামের শহীদ সিকদার, তার দুই ছেলে ও ভাতিজা মিলে সিকদার মোটর সাইকেল চালক আরাফাত সিকদারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আরাফাতের মোটর সাইকেলে আমার ছেলে হাবিব উল্লাহ ছিল। তাকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবী করছি।

নিহত আরাফাত খাঁন বাবা আব্দুল জলিল খাঁন কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় আমার ছেলেকে শহীদ সিকদার ও তার ছেলেরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।

শারিকখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক খাঁন বলেন, মোটরসাইকেল চালক আরাফাত খাঁন আমার ভাইয়ের ছেলে। তাকে শহীদ সিকদার ও তার ছেলেরা পুর্ব শত্রুতার জের ধরে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আরাফাত খানকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন। অপর আহতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ