ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) মঙ্গলবার চন্দ্রযান-৩ রোভারে লেজার-ইনডুসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপি (এলআইবিএস) যন্ত্রের কথা ঘোষণা করেছে এবং জানিয়েছে যে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের মৌলিক গঠনের উপর প্রথমবারের মতো ইন-সিটু পরীক্ষা চালিয়েছে।
ইন-সিটু পরিমাপ চন্দ্র পৃষ্ঠে সালফার (এস) এর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। মহাকাশ সংস্থা আরও বলেছে যে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে হাইড্রোজেনের অনুসন্ধান চলছে। ইসরো টুইট করে জানিয়েছে, “রোভারে থাকা লেজার-ইনডুসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ যন্ত্রটি দ্ব্যর্থহীনভাবে দক্ষিণ মেরুর কাছে চন্দ্র পৃষ্ঠে সালফার (S) এর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে প্রথমবারের মতো ইন-সিটু পরিমাপের মাধ্যমে। প্রত্যাশিত ভাবে Al, Ca, Fe, Cr, Ti, Mn, Si, এবং O সনাক্ত করা হয়েছে। হাইড্রোজেন (H) এর জন্য অনুসন্ধান চলছে।”
এলআইবিএস হল একটি বৈজ্ঞানিক কৌশল যা খনিজগুলির গঠন পরিমাপ করে তীব্র লেজার পালস দিয়ে পরীক্ষা করে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রজ্ঞান রোভারের অবস্থা কী? সবাই আজকাল একই জিনিস জিজ্ঞাসা করছে। এর কারণ হল, চাঁদের এই অংশে তাপমাত্রা মাইনাস ২০০ ডিগ্রির বেশি কমে যায়। সূর্যের আলো এখানে ঠিকমতো না পৌঁছনোর কারণে এই জায়গাটা প্রচণ্ড ঠান্ডা থাকে। ইতিমধ্যে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) প্রজ্ঞান রোভার সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেট দিয়েছে। ইসরো জানিয়েছে প্রজ্ঞান রোভার চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে সালফার খুঁজে পেয়েছে এবং হাইড্রোজেনের সন্ধান করছে।
চন্দ্রযান-৩ মিশনের মাধ্যমে চাঁদে পাঠানো হয়েছিল বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান রোভার। প্রজ্ঞান রোভারের মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠে নানা ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সোমবার, প্রজ্ঞান রোভারটি একটি বড় সমস্যায় পড়েছিল, যখন এর সামনে চার মিটার চওড়া গর্ত অর্থাৎ চাঁদের গর্ত এসে পড়ে। রোভারটিকে অবিলম্বে পিছু হটতে নির্দেশ দিয়ে ইসরো বিজ্ঞানীরা এটিকে গর্তে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। রোভারটি যদি গর্তের মধ্যে পড়ে যেত, তাহলে পুরো মিশন ব্যর্থ হতে পারত।
বিক্রম ল্যান্ডারের মাধ্যমে পাঠানো ‘চন্দ্র সারফেস থার্মোফিজিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট’ (ChaSTE) চাঁদের দক্ষিণ মেরুর পৃষ্ঠের তাপমাত্রার কথা জানিয়েছে। এটি ছিল ChaSTE-এর মাধ্যমে করা প্রথম পর্যবেক্ষণ। এটি চাঁদের পৃষ্ঠের তাপমাত্রার পরিবর্তনগুলি বুঝতে সাহায্য করবে। ইসরো জানিয়েছে যে প্রজ্ঞান রোভার ঘোরাফেরা করছে সেই জায়গাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই চাঁদে চন্দ্রযানের অবতরণ স্থানটির নাম দিয়েছেন ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’।