স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিএনপির আবারো আগুন সন্ত্রাসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি ও সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। আমাদের আপত্তি জনদুর্ভোগ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে।
মন্ত্রী বলেন, শুক্রবারও তারা বড় সমাবেশ করেছে।এর আগে পদযাত্রাসহ বিভিন্ন বড় সমাবেশে সারা দেশ থেকে তারা নেতাকর্মী ঢাকায় নিয়ে এসেছিল। আমরা সব সময় বলেছি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনো বাধা নেই। কিন্তু যখনই তারা গাড়ি ভাঙচুর করে, অগ্নিসংযোগ করে, তখনই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করে। শনিবারও পুলিশ তাই করেছে। আর এটা করতে গিয়েই পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছেন।
শনিবার বিকালে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান লন্ডন থেকে নির্দেশনা দিয়ে দল চালাচ্ছেন। তার বক্তব্য প্রচারে হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আছে। তারপরও সমাবেশের মাধ্যমে শনিবার তার বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অতীতে জঙ্গি দমন করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য শাহাদাতবরণ করেছেন। শনিবারও মানুষের জানমাল রক্ষায় পুলিশ বীরত্বের সঙ্গে রাজপথে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করেছে। ২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের ডাক দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওই সময় যানবাহন, মানুষ এবং জীবজন্তুসহ কোনো কিছুই আগুন সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
মন্ত্রী বলেন, শনিবার বিএনপি নেতারা কেবল রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান নিয়ে বসে থাকেননি। তারা যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছেন। পুলিশ অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গেলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ হামলায় যারা আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৩১ জন পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কেউ কেউ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অল্প আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন। ডিএমপি যুগ্ম কমিশনার মেহেদী হাসানের ওপর ২০টি ঢিল ছোঁড়া হয়েছে। বিএনপির আগুন সন্ত্রাসের কারণেই ২০১৪-১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি বার্ন হাসপাতাল করতে বাধ্য হন। আজ আমাদের আবারো সেই ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তারা আবারো সে ধরনের কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে কিনা- দেখতে হবে।
তিনি বলেন, শনিবার অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বালানোর হুকুম দেন। অন্য নেতারা ওই ধরনের কর্মকাণ্ডের দিকে যাচ্ছেন। আমরা অনুরোধ জানাব- বিএনপি যেন ২০১৪-১৫ সালের ঘটনা আর না ঘটায়।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আটকের সময় বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান রাস্তা থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন। পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে মানবতার দায়িত্ব পালন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে অনেক মানবিক কাজ করে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ খেতাব অর্জন করেছেন। আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়েছিলেন সমবেদনা জানাতে। ওইদিন তিনি দরজা খুলেননি।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা শনিবার ছয়টি বাস ও বেশ কয়েকটি পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন। সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাস্তায় অবস্থান করে বিএনপির ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম নিবারণ করেছেন। তারা পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন। আমাদের দেশের মানুষ এমনই যে, কোথাও ভাঙচুর হলে কেউ আহত হলে সেখানে সবাই সেবা দিতে যান। ছাত্রলীগ-যুবলীগও এই দায়িত্ব পালন করেছে।