শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাড়ছে পানি, চার জেলায় প্লাবনের শঙ্কা

মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ায় গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের এ প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে, ভারী বর্ষণের ফলে ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে কয়েকটি নদ-নদীর পানি। এ অবস্থায় প্লাবনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে দেশের চার জেলার নিম্নাঞ্চলে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল ছাড়াও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

বৃষ্টিপাতের মধ্যে দেশের নদ-নদীর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদর রহমান জানান, বর্তমানে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রংপুর বিভাগের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে দুধকুমার নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে এবং জেলাগুলো সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল ছাড়াও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

এ ছাড়া রংপুর বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সমতলও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং পরবর্তী একদিন পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।

রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও এর ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৫ দিন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। সেইসঙ্গে রাজশাহী বিভাগের গঙ্গার পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং এর ভাটিতে পদ্মার পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। পাশাপাশি তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এই অবস্থায় আগামী ২ দিন পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল ধীরগতিতে হ্রাস পেতে পারে এবং পরবর্তী একদিন পানি সমতল স্থিতিশীল এবং এর পরবর্তী ২ দিনে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

রংপুর ছাড়াও সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। পরবর্তী ৩ দিনে এসব নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য প্রধান নদী মনু, খোয়াই ও ধলাই নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া সোমেশ্বরী, ভুলাই নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সারিগোয়াইন, কংস নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং পরবর্তী ৩ দিন পর্যন্ত পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, গোমতী নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আর হালদা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। আগামী ৩ দিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কম প্রবণতা রয়েছে। ফলে এই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগর এলাকায় কোনো লঘুচাপ না থাকায় আগামী ৩ দিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোর স্বাভাবিক জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ