সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, মন্ত্রী থাকা অবস্থায় এক টাকাও দুর্নীতি করিনি, সুশীল ও সাংবাদিক সমাজের প্রতিনিধিসহ সরকারের উচ্চ মহলের লোক দিয়ে কমিটি করা হোক। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলছি ওই কমিটি যদি আমার ১ টাকার দুর্নীতি পায়, তাহলে আমি সংসদ থেকে পদত্যাগ করবো।
শনিবার (২ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, হলফনামায় বিদেশে থাকা সম্পদের কোনো কলাম নাই। তাই বিদেশে থাকা সম্পদের বিবরণ দেয়া হয় নাই। বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা আমি বিদেশে নিই নাই। বিদেশে আমার বাবার ব্যবসা ছিল, প্রায় ৫০ বছরের, এটা আমাদের পারিবারিক ব্যবসা।
তিনি বলেন, মন্ত্রী হিসেবে তিনি বাড়ি, গাড়ি কিছুই ব্যবহার করেননি। এমনকি ভাতাও নিজে খরচ না করে দান করেছেন। তিনি দেশকে দিতে এসেছেন, নিতে আসেননি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে বিদেশে ব্যবসা করি আর রাজনীতিতে এসেছি ২০১৩ সালে সেই ধারাবাহিকতায় সেখানে সম্পদ বেড়েছে। টিআইবি বা লন্ডনের যেকোনো সংস্থা তদন্ত করতে চাইলে সহায়তা করবো।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এর আগে আরও অনেক গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এর আগে, গত ২৬ ডিসেম্বর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এক মন্ত্রীর বিদেশে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকার ব্যবসা রয়েছে। তবে তিনি নির্বাচনী হলফনামায় এ তথ্য দেননি। ওই সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি ওই মন্ত্রীর নাম প্রকাশ করেনি। এর পরেই দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
লন্ডনে নিজের ব্যবসা ও সম্পদ থাকার কথা স্বীকার করেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ। তিনি দাবি করেছেন, বিদেশের সম্পদ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা নেননি।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, তার বাবা ১৯৬৭ সাল থেকে লন্ডনে ব্যবসা করেছেন। তিনি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে ১৯৯১ সাল থেকে সেখানে ব্যবসা করেছেন। এরপর তিনি লন্ডনে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন।
নির্বাচনী হলফনামায় বিদেশে সম্পদ থাকার কথা গোপন করার বিষয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, হলফনামা পুরোপুরি বাংলাদেশের আয়কর রিটার্নের ওপর ভিত্তি করে দেয়া হয়। এতে বিদেশে সম্পদের তথ্য দেয়ার আলাদা কোনো ছক নেই।
তিনি বলেন, বিদেশে তার আলাদা আয়কর নথি আছে। আর বিদেশে যে সম্পদ আছে, এর পেছনে ব্যাংক ঋণ আছে। মন্ত্রী থাকার সময় লন্ডনে ব্যবসার ব্যাপক সম্প্রসারণের বিষয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, করোনা মহামারি তার জন্য সুযোগ হয়ে আসে। সে সময় লন্ডনে বাড়ির দাম পড়ে যায়।
ব্যাংক ঋণের সুদ কমে যায়। সে সময় তিনি ঝুঁকি নিয়ে লাভবান হয়েছেন।
মন্ত্রী থাকার সময় তার মন্ত্রণালয়ে এক টাকার দুর্নীতিও হয়নি বলে দাবি করে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, প্রয়োজনে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল গঠন করে তদন্ত গতে পারে।