জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে জিয়াউর রহমান দেশে আসতে দেয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরে শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ আগস্টের পর নির্বাসিত সময়ে বিচার চাওয়ার অধিকারও আমাদের ছিল না। রিফিউজি হিসেবে ছিলাম। বাবা-মা-ভাইয়ের হত্যার বিচার পাওয়ার অধিকার আমাদের ছিল না। কারণ খুনিদের রক্ষায় ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিল। বিচার পাওয়ার অধিকারটুকুও কেড়ে নেয়া হয়েছিল। তদন্ত কমিশনকে তখন জিয়াউর রহমান দেশে আসতে দেয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসে আমি আমার ফুফুর বাড়িতে থাকতাম। পরে আমার স্বামীর কোয়ার্টারে থাকতাম। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, জাতির পিতা তার জীবন জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তাই তার ওই সম্পত্তি তো জনগণেরই। তাই আমরা আমাদের ধানমন্ডির বাড়িটি ১৯৯৪ সালে মিউজিয়াম বানিয়েছি।
‘যে বাড়ি থেকে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দিয়েছিলেন, যেই বাড়ি থেকে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, সেই বাড়িতেই জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাই এই সম্পত্তিটা আমরা জনগণকে উৎসর্গ করেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট করে এই বাড়িটি আমরা দান করে দিয়েছি। যদিও ঢাকা শহরে আমাদের দুই বোনের থাকার কোনো বাড়ি ছিল না’, আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সেখানে সিঁড়িতে জাতির পিতা শহীদ হয়েছেন, সেখানে সাহাবুদ্দিনের আঁকা ছবি রেখেছি। কারণ শিল্পীর আঁকা ছবি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করা যায়। সেইসঙ্গে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়া যায়। একটা চেতনাও জাগ্রত হয়। আর আমাদের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘শিল্পীর মনের আবেগ যখন বিকশিত হয়, তখন কোনো বাধাই বাধা মানে না। তার কাছে কোনো না কোনোভাবেই সেটা প্রকাশ পায়। যাক আজকে আমি খুব আনন্দিত যে, শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্ম প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে তার যে প্রকৃতিকে তুলে ধরা, দেশের মানুষের অবস্থা তুলে ধরা, সেইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরা, এগুলো বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় যুব সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং তার সাফল্য কামনা করি।’