প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় সফরে আজ সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকায় পৌঁছেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফরাসি প্রেসিডেন্টকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
রাত ৮টা ১০ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছার পর ফরাসি প্রেসিডেন্টকে বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয় এবং এসময় উভয় দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়।
সশস্ত্র বাহিনী তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে এবং ২১ বার তোপধ্বনি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ফরাসী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।
শেখ হাসিনা ও ম্যাক্রঁ উভয়েই নয়াদিল্লিতে জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে যোগদান শেষে আজ ঢাকায় পৌঁছেন।
১৯৯০ সালের ২০-২৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ বাংলাদেশ সফরের পর এটি বাংলাদেশে কোন ফরাসি প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় সফর। আগামীকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং একান্ত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরে তারা যৌথ প্রেস ব্রিফিং করবেন।
পিএমও অফিস থেকে বের হওয়ার আগে ম্যাক্রঁ সেখানে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে সই করবেন। ম্যাক্রঁঁর আজ সন্ধ্যায় তার সম্মানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আয়োজিত এক ভোজসভায় যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আগামীকাল সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রয়েছেন।
ফরাসি পক্ষ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর এই সফরটি দুই দেশের মধ্যে আরও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুসংহত এবং ‘কিছু প্রকল্প জোরদার করা’র উপলক্ষ্য হবে।
১৯৯০ সালের শুরু থেকে দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে। বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে মোট বাণিজ্য ২১০ মিলিয়ন ইউরো থেকে বর্তমানে ৪.৯ বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত হয়েছে এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে ফ্রান্স ৫ম দেশ। ফরাসি কোম্পানিগুলো এখন ইঞ্জিনিয়ারিং, জ্বালার্নি, এরোস্পেস ও পানি সম্পদসহ বিভিন্ন খাতে সম্পৃক্ত।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স আশা করছে, ফরাসি প্রেসিডেন্টের এই বাংলাদেশ সফর দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁর আমন্ত্রণে ২০২১ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স সফর করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা ছাড়াও, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।
সোমবার বিকেলে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।