মাত্র ১৯ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত অবিন্তা কবির। এ ঘটনার প্রেক্ষাপট নিয়ে তৈরি হয়েছে বলিউড সিনেমা ‘ফারাজ’। যে সিনেমাটির মুক্তি চায় না নিহত অবিন্তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর শাহজাদপুরে অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আপত্তি জানান তিনি।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়ংকর জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত ২০ জনের মধ্যে একজন ছিলেন অবিন্তা। বাংলাদেশকে ঘিরে এ তরুণীর স্বপ্ন ছিল অনেক। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে দ্রুত পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে বাংলাদেশের বন্ধুদের সঙ্গে স্বপ্নপূরণের কাজ শুরু করতে চেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার ছুটির ফাঁকে দেশে ফিরে জঙ্গি হামলার ভয়াল থাবায় হারাতে হয়েছিল তার প্রাণ। এ প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত হয়েছে বলিউড সিনেমা ‘ফারাজ’। যে সিনেমার মুক্তি চান না অবিন্তার মা রুবা আহমেদ।
একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে মা রুবা আহমেদের অনুরোধ, সিনেমাটির মাধ্যমে যেন ছয় বছর আগে ঘটে যাওয়া সে বিভীষিকাময় রাতে তাকে ফিরিয়ে নেয়া না হয়। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, তার মেয়েকে যেন সিনেমার বড় পর্দায় কারো ব্যবসার মূলধন হিসেবে ব্যবহার করা না হয়।
বলিউডের এ সিনেমাটি দৈনিক বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি নুরুজ্জামান লাবুর ‘হলি আর্টিজান: একটি জার্নালিস্টিক অনুসন্ধান’ বইয়ের সূত্র ধরে নির্মাণ করা হয়েছে। সিনেমাটি প্রসঙ্গে রুবা বলেন, শুরুতে ভারতীয় প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিবাচক সাড়া পেলেও পরবর্তী সময়ে সিনেমার পোস্টার মুক্তির পর আইনি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় নিহত অবিন্তা কবির ও তারিসা জৈনের পরিবার। বর্তমানে দিল্লি হাইকোর্টে মামলাটি চলমান রয়েছে।
কারণ হিসেবে রুবা আরও জানান, সিনেমাটি নির্মাণের আগে কর্তৃপক্ষ নিহতদের পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। মূল ঘটনাকে বিকৃত করে নির্মিত এ সিনেমা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট করবে বলে দাবি তার। নিজ দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও এ সিনেমা দেখতে চান না তিনি।
সাংবাদিকদের এসব কথা বলার সময় অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদ ভারতীয় ছবি ‘ফারাজ’ নির্মাণ ও মুক্তির বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন। দিল্লীর আদালতে লড়ছেন এই মা।
এদিকে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ‘ফারাজ’-এর মুক্তির তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।