প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে প্রশিক্ষিত জনসংখ্যার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বজায় রেখে প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমকে যুগোপযোগী এবং সময়োপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গণভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের (এনসিটি) অষ্টম সভায় আজ বোরবার যোগ দিয়ে তিনি বলেন, তাঁর সরকার রূপকল্প ২০৪১-এর সাথে সঙ্গতি রেখে দেশকে একটি উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
তিনি বলেন, ‘একটি জাতির উন্নয়নের জন্য শুধুমাত্র প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। বিশ্ব পরিবর্তনশীল। এই সময়টি প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সাথে মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
স্মার্ট বাংলাদেশ কী তা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দিয়ে আমরা একটি স্মার্ট জনসংখ্যা গড়ে তুলব। আমাদের অর্থনীতি হবে প্রযুক্তিভিত্তিক স্মার্ট অর্থনীতি। এমনকি আমাদের স্বাস্থ্য ও কৃষিও হবে প্রযুক্তিনির্ভর এবং যান্ত্রিক। আমরা এই সব জিনিসে স্মার্ট হতে চাই।’
তিনি বলেন, তাঁরা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজ ও সরকারকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে চান।
শেখ হাসিনা বলেন, এনসিটিকে প্রশিক্ষণ নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন এবং সময় উপযোগী করে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পর্যায়ক্রমে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সমগ্র জনসংখ্যাকে সম্পৃক্ত করে উন্নতি করতে চাই। কেউ পিছিয়ে থাকবে না এবং আমরা সবাইকে নিয়ে সমৃদ্ধির দিকে পা বাড়াব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ অদম্য গতিতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হবে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ এবং হার্ডকোর দারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশে কোনো চরম দারিদ্র্য থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশ একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে কারণ, বিশ্ব বর্তমানে বাংলাদেশকে সম্মান দেখাচ্ছে। এটি আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশ পরিচালনা করায় বাংলাদেশ এত মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ অনেকটাই বাস্তবায়ন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই রাজনৈতিক নেতারা ক্ষমতায় ছিলেন বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তির মতো প্রতিটি খাতে অলৌকিক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থাপনা ছাড়া কোনো দেশই উন্নতি করতে পারে না।
বাংলাদেশ কখনোই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সামরিক স্বৈরশাসনের অধীনে এমন অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেনি, তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর এটা উপলব্ধি করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আমি দাবি করতে পারি যে ২০০৯-২০২৩ সাল পর্যন্ত অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে হয়েছে।’