বৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রবারণা পূর্ণিমার দিনে রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ বৌদ্ধ সমাজের

২৮ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমার দিন মানবিক দিক বিবেচনা করে রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজ।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমন কান্তি বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘আগামী শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিশ্ব বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্যোগে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতায় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপিত হবে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ও প্রতি বছরের ন্যায় হৃদয়ের গভীর শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় আচার এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতায় দিনটি পালনের জন্য বিগত এক বছর ধরে অপেক্ষা করে আসছে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই তিথি বা উৎসব পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় বিধায় এক বছর আগেই এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন-তারিখ নির্দিষ্ট হয় এবং সব সরকারি-বেসরকারি পঞ্জিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত থাকে। তাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল অবশ্যই দূরদর্শী চিন্তাসম্পন্ন এ দেশের রাজনৈতিক প্রাজ্ঞ নেতৃবৃন্দ যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বিবেচনা করে আসন্ন পূর্ণিমা তিথিকে রাজনৈতিক কর্মসূচিমুক্ত রাখবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, দেশের কিছু রাজনৈতিক দল হয়তো অনিচ্ছাকৃত ও অসাবধানবশত এই কর্মসূচি রেখেছে৷’

সুমন কান্তি বলেন, ‘ইতিমধ্যে এই কর্মসূচি নিয়ে চলছে নানা মাত্রিক প্রচারণা, যা সাধারণ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর মনে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে এই পবিত্র পূর্ণিমা দিবসে ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী নির্বিঘ্নে যাতায়াতের ক্ষেত্রে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় আমরা দেশের রাজনৈতিক প্রাজ্ঞ নেতৃবৃন্দের আন্তরিক শুভদৃষ্টি কামনা করছি।’

নির্বিঘ্নে, ভীতিহীনভাবে উৎসব পালনের সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সুমন কান্তি আরও বলেন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পবিত্র প্রবারণা পূর্ণিমা ধর্মীয়ভাবে বৌদ্ধ উৎসব হলেও সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দিক থেকে এই অনুষ্ঠানের সর্বজনীন গুরুত্ব রয়েছে। তাই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মাচার তথা অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মৈত্রী চর্চার গুরুত্ব অনুধাবন করে বৌদ্ধদের পবিত্র প্রবারণা পূর্ণিমা তিথিতে প্রস্তাবিত রাজনৈতিক কর্মসূচি বিশেষ মানবিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।

সভাপতির বক্তব্যে প্রকৌশলী দিব্যেন্দু বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া বলেন, ‘প্রবারণা পূর্ণিমার মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনে পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক কর্মসূচি দেশে হিংসা-বিদ্বেষ ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত বাড়াতে পারে। ফলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ে অসংখ্য নারী-পুরুষ ধর্ম পালনে বাধার সম্মুখীন হতে পারে। এই শুভ দিনে সব রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহার করে বৌদ্ধদের ধর্মীয় আচার, পূজা-আর্চনা ও ফানুস উৎসব উদ্যাপনে সহযোগিতা করবেন।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ