ম্যাচের শেষে কাতারে বিশ্বকাপের ময়দানের মতোই প্যারিসের ঘরোয়া স্টেডিয়ামে দেখলাম সৌহার্দ্যের একই ছবি। একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন মানুষ। সান্ত্বনা দিচ্ছেন।
কিলিয়ান এমবাপেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। রবিবার দোহায়। ছবি: রয়টার্স।
এ বারের বিশ্বকাপ হয়তো জিততে পারল না ফ্রান্স,কিন্তু সাধারণ মানুষের মন জিতে নিয়ে হৃদয়ের নায়ক হয়ে রয়েগেলেন এমবাপের মতো ফুটবলার আর তাঁর দল।
আজ সকাল থেকে বিশ্বকাপ ফাইনালের সাক্ষী থাকার জন্য প্রস্তুত ছিলেন প্যারিসের মানুষ। প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, আজ শঁজেলিঁজে চত্বরে কোনও গাড়ি চলবে না। গোলমাল আটকাতে মোতায়েন করা হয়েছিল প্রায় ২৭০০ পুলিশ!
শহরের প্রাণকেন্দ্রে একে গাড়ি চলাচল বন্ধ। তার উপরে জাঁকিয়ে পড়েছে ঠান্ডা। তাপমাত্রা মাইনাসের নীচে। তবু ভ্রূক্ষেপ নেই মানুষের। কিছুটা গাড়িতে, বাকিটা পায়ে হেঁটেই পাবলিক স্টেডিয়ামগুলোয় ভিড় জমিয়েছিল মানুষ। প্রশাসনের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, পাবলিক স্টেডিয়ামগুলিতে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে ম্যাচ দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমিও পরিবার নিয়ে বাড়ির কাছের একটি স্টেডিয়ামে এসেছিলাম। সকলের সঙ্গে হইহই করেই খেলা দেখলাম। আমি নিজে আর্জেন্টিনার ভক্ত। মেসিদের বিশ্বকাপ জয়ে আমি ভীষণ খুশি। তবে প্যারিসে বসে বিশ্বকাপের ময়দানে ফ্রান্সকে এমন দুর্দান্ত ভাবে লড়তে দেখা, আমার জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।
ম্যাচের শুরুতে আর্জেন্টিনা দু’টো গোল দেওয়ার পরে স্টেডিয়ামে সকলে কেমন ঝিমিয়ে গিয়েছিল। বাচ্চারা তো কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিল। তবে ফ্রান্স গোল দু’টো শোধ করার পরেই ছবিটা বদলে গেল। টানটান উত্তেজনা তখন। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের শেষে ফ্রান্স আজ হেরে গেলেও চরম হতাশার ছবিটা কিন্তু চোখে পড়ল না কোথাও। ম্যাচের শেষে কাতারে বিশ্বকাপের ময়দানের মতোই প্যারিসের ঘরোয়া স্টেডিয়ামে দেখলাম সৌহার্দ্যের একই ছবি। একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন মানুষ। সান্ত্বনা দিচ্ছেন। দেখলাম, ম্যাচের শেষে স্টেডিয়ামের বাইরে বাচ্চারা সঙ্গে করে আনা রংমশাল জ্বালিয়ে নিচ্ছিল। ফ্রান্স হারলেও জিতেছেন মেসি। বিশ্বকাপের শেষে মেসিভক্তেরা আজ এই সান্ত্বনা নিয়েই ঘরে ফিরলেন।