শুক্রবার, ২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পুলিশ চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে: সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বিএনপি শনিবার ২০১৫ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটালেও পুলিশ বাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে রোববার সংসদ বৈঠকে ৩০০ বিধিতে দেওয়া বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শনিবারের সংঘর্ষে পুলিশের একজন নিহত ও ১১৫ সদস্য আহত হয়েছেন। আর ২৬টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। বিএনপি পরিকল্পিতভাবে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সংঘবদ্ধভাবে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি অসাংবিধানিক বিষয় নিয়ে জনসমাগম করেছে। সমাবেশের জন্য তাদের একটি মাঠে যেতে বলা হলেও যায়নি। দলীয় কার্যালয়ের জনসমাগমের অবস্থান নাইটিংগেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত করবে বলে পুলিশকে জানিয়েছিল। কিন্তু ইচ্ছা করেই তারা নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে অবস্থান নেয়। বিচারকদের আবাসন কমপ্লেক্স এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে। যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনের পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছিল, তখন লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ এবং গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার সময় প্রধান বিচারপতির বাসায় জোর করে ঢুকে পড়ে। এ ধরনের ঘটনা কোনো দিন দেখা যায়নি। অবাক বিস্ময়ে এ ঘটনা দেখলাম।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা আইডিইবি ভবনে ঢুকে গাড়িগুলো ভাঙচুর ও আগুন দেয়। জাজেজ কমপ্লেক্সের আধুনিক সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলে। তাণ্ডব করবে এবং সাক্ষী না রাখতেই এসব করে। অথচ তারা পুলিশকে বলেছিল, কোনো ধরনের সহিংসতা করবে না। সমাবেশ শেষ করে চলে যাবে।

রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলার ঘটনাকে গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, গাজায় হাসপাতালে ইসরায়েল যেভাবে সামরিক অভিযান করছে, সারা পৃথিবী তার নিন্দা করছে। সেই দৃশ্যপট আমরা এখানেও দেখলাম। এখানে শেষ নয়, তারা মহিলা লীগের কর্মীদের পিটিয়েছে। পুলিশ সদস্যের ওপর বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়েছে। এটা চোখে না দেখলে অনুমান করা যাবে না। মনে হয়েছিল, তারা ব্যাগে করে ইটপাটকেল নিয়ে এসেছিল। সেগুলো পুলিশের গায়ে ছুড়ছিল, সেখানে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী ছিল না। সেই ঢিলের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য পড়ে যান। এরপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাঁকে পেটায়। এ ধরনের তাণ্ডব কোনো সভ্য জগতে দেখা যায় না।

মন্ত্রী বলেন, এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পুলিশ কনস্টেবলকে নৃশংসভাবে পেটানো হয়। তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়। এ ধরনের নৃশংসতা ও বর্বরতা কোনো মানুষ সহ্য করবে না। তাদের আক্রমণে গুরুতর আহত আরেক পুলিশকর্মী এখন নিউরো হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। দু’জন আনসার মারাত্মক আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১১৫ সদস্য আহত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন,অবাক কথা হচ্ছে, তারা পুলিশকে মারল, সাংবাদিক পেটাল, মহিলা লীগের মেয়েদের গায়ে হাত তুলল, গাড়িতে আগুন দিল–আবার তারাই হরতাল ডাকল। হরতাল ডেকে বাসে অগ্নিসংযোগ করে ঘুমিয়ে থাকা হেলপারকে পুড়িয়ে মেরেছে। তারা ২০১৫ সালের ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে।তারা নীলফামারীতে আওয়ামী লীগের হরতালবিরোধী মিছিলকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং আমাদের এক কর্মী নিহত হন। এরপরও পুলিশ বাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে কর্তব্য পালন করে যাচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ