ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু ও শিশুদের জোর করে রাশিয়ায় তুলে নিয়ে যাওয়ার ‘অপরাধে’ সম্প্রতি পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিদেশের মাটিতে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হলে, তা ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে ধরা হবে। এমনই বার্তা দিলেন রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু ও শিশুদের জোর করে রাশিয়ায় তুলে নিয়ে যাওয়ার ‘অপরাধে’ সম্প্রতি পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এর সদস্য বিশ্বের ১২৩টি দেশ। আদালতের রায়, এই দেশগুলির মধ্যে কোনও একটিতে পা রাখলেই গ্রেফতার করা হবে পুতিনকে।
রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, তারা আইসিসি-র সদস্য নয়। ওই রায় মস্কো মানে না। বিষয়টিকে ‘ফাঁপা আওয়াজ’ বলেও উড়িয়ে দিয়েছে ক্রেমলিন। যদিও স্বাভাবিক ভাবেই এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাশিয়া।
গত কাল অনেক রাতে একটি বক্তৃতায় মেদভেদেভ বলেন, ‘‘পুতিনকে গ্রেফতার করা হলেই একটি দেশকে আক্রমণ করা হবে।’’
পুতিন-ঘনিষ্ঠেরা বলছেন, ‘‘এটা পরিষ্কার, এমন কোনও ঘটনা কখনওই ঘটবে না। কিন্তু কল্পনা করা যাক, পুতিনকে গ্রেফতার করা হল। ধরা যাক, জার্মানিতে গেলেন পরমাণু শক্তিধর দেশটির প্রধান। আর সেখানে তাঁকে গ্রেফতার করা হল। সেটা কেমন হবে? সেটা কিন্তু রুশ ফেডারেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে।’’
মেদভেদেভ বলেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে বুন্ডেসটাগের উপরে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়বে। জার্মান চ্যান্সেলরের অফিসে হামলা চলবে।’’
রাশিয়া আজও ইউক্রেনের একাধিক শহরে হামলা চালিয়েছে। সদ্য মস্কো সফর সেরে বেজিংয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিন দিনের সফরে পুতিনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন শি। তাঁদের আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু ছিল ইউক্রেনের যুদ্ধ।
দু’দেশ যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‘রাশিয়া ফের শান্তি আলোচনা শুরু করতে চায়।’’ অথচ শি রওনা দিতে না-দিতেই ইউক্রেনে হামলা চালাল রাশিয়া। কিভ অঞ্চলে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জ়াপোরিজ়িয়া থেকে এক জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। দু’টি শিশু-সহ ৩৪ জন গুরুতর জখম। একটি আবাসনে এসে পড়েছিল রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। ৯তলা বাড়িটি দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করে। সেই ছবি ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এ পর্যন্ত রাশিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে সরব হয়েছে ইউক্রেন। যদিও চিনা প্রেসিডেন্টের মস্কো-সফর নিয়ে একেবারে চুপ তারা। ফেব্রুয়ারি মাসে চিন যুদ্ধ থামাতে ১২টি পয়েন্টের একটি শান্তি-প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ইউক্রেন। ধারণা করা হচ্ছে, চিন যতই রাশিয়ার হয়ে কথা বলুক না কেন, তাদের নিয়ে আশাবাদী ইউক্রেন।
শি-র মস্কো সফরের পরে ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। সে নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জ়েলেনস্কি বলেছেন, ‘‘তেমন নির্দিষ্ট কোনও কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা এখনও কিছু জানি না।’’ আনন্দবাজার।