সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সকল অপরাধীদের জড়ো করে পাহাড়ে পুর্নবাসিত করেছেন জিয়াউর রহমান। তারা পাহাড়ের পরিবেশ অশান্ত করতে কাজ করেছে। পাহাড়ে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী উলফাকে আশ্রয় ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জিয়া। এনিয়ে দীর্ঘদিন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানপোড়ন চলেছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর সিরডাপের শামসুল হক মিলনায়তনে ‘পাহাড়ে সম্প্রীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। আলোচনা সভার আয়োজন করে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।
জিয়া-এরশাদ শাসনামলের প্রসঙ্গ টেনে কে এম খালিদ বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় সামরিক শক্তিগুলো পাহাড়কে অশান্ত করে তুলেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এখন পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইছে। তবে পাহাড়িদের নিজেদের মধ্যে সংঘাত রয়েছে। আনসারুল্লাহ বাংলাটিমসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসীগোষ্ঠী পাহাড়ে আশ্রয় নিয়ে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে। ’
জিয়া পরিবারের সবাইকে খুনি আখ্যা দিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চারনেতাকে হত্যায় জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ পরিকল্পনা ও অংশগ্রহণ ছিল। তারেক রহমানের হাতে আওয়ামী লীগ পরিবারের ২৪ জনের রক্ত লেগে আছে। এই পরিবারের সবার হাতে খুনের রক্ত। ’
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আব্দুল মান্নন বলেন,‘একটি মহল পাহাড়ের পরস্থিতি ঘোলাটে করে ফায়দা লোটার জন্য তৎপর। ওখানে কে এন এফ নামে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদীর জন্ম হয়েছে। সেখানে আমাদের দেশেরই বাঙ্গালী সত্ত্বা তাদের জঙ্গিবাদের ট্রেনিং দিচ্ছে অর্থের বিনিময়ে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে এখনো শান্তি বিরাজ না করার পেছনে নানাবিধ কারণ আছে। পাহাড়ের মানুষ শান্তিপ্রিয়, পাহাড় আগে খুব বেশি অশান্ত ছিল না। পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও সমতলের বাঙ্গালীদের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। পাহাড়ের ভূমি বিষয়ক সেসব সমস্যার উত্তরণ ঘটিয়ে আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশে বসবাস করবো। ’
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক পীযূষ বন্দোপাধ্যায় তারা লিখিত বক্তব্যে বলেন,‘পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের মোট আয়তনের এক – দশমাংশ। জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় মোট আয়তনের এক – দশমাংশ বিশাল এলাকা। সেখানকার ভূমি বিন্যাস, স্থানীয় উপজাতি জনগন, অভাবনীয় ও অনাবিস্কৃত প্রাকৃতিক সম্পদ এবং সর্বোপরি ভৌগলিক অবস্থান বাংলাদেশের অপার বহুত্ববাদের সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে। ’
১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন,‘শান্তিচুক্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর যা ক্ষতি হয়েছে তা কখনো পূরণ হওয়ার সম্ভব নয়। চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়েছে। ১৫টি ধারার আংশিক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ৯টি ধারা বাস্তবায়নে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘সরকারের সদিচ্ছার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল ধর্ম, গোত্র ও জাতির সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ়তর করা। ’
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক পীযূষ বন্দোপাধ্যায়ের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আব্দুল মান্নন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়।