আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতুতে সড়কপথ চালুর ১০ মাসের মাথায় প্রস্তুত হয়ে গেছে রেলপথ। ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর রেলপথের কাজ শেষ করেছেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা। আজ মঙ্গলবার ভাঙা থেকে মাওয়া পর্যন্ত চলবে পরীক্ষামূলক ট্রেন। প্রথমবারের মতো ট্রেন পাড়ি দেবে পুরো পদ্মা সেতু।
এদিকে মাদারীপুরের মাটি দিয়ে প্রথমবার ট্রেন চলার খবরে খুশির বন্যা বইছে পুরো দক্ষিণাঞ্চলে। সবচেয়ে খুশি জেলার শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের মানুষ। পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলবে, যা ছিল স্বপ্নাতীত। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে আজ।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পুরোদমে ট্রেন চলাচল শুরু হলে আরও একটি স্মারক যোগ হবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে।
গত বছর ২৫ জুন বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৬ জুন থেকে সড়কপথের দুয়ার খুলে যায়। অপেক্ষায় ছিল সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল। পদ্মা সেতু চালুর ৯ মাস ১০ দিনের মাথায় অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। জীবনের প্রথম মাদারীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ রেলগাড়ি দেখবে এটি তাদের কাছে পরম পাওয়া।
একই সঙ্গে স্বল্প খরচে মানুষের যাতায়াত সুবিধা, পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে গতি আসবে, ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে। চাঙ্গা হবে দেশের অর্থনীতি। বিশেষ করে স্বল্প খরচে কৃষিপণ্য রাজধানীতে নিতে পারবেন ভাটি অঞ্চলের কৃষকরা। এরই মধ্য দিয়ে দেশবাসী আরও একটি মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছে।
ভাঙ্গা স্টেশনমাস্টার মো. শাহজাহান জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ভাঙা স্টেশন থেকে একটি গ্যাংকার ট্রেন এবং সাত বগিবিশিষ্ট যাত্রীবাহী একটি স্পেশাল ট্রেন মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে গ্যাংকার ট্রেন ছাড়া হবে, তার পরে স্পেশাল ট্রেন যাত্রা করবে। যাত্রীবাহী হলেও এই স্পেশাল টেনে কোনো যাত্রী থাকবে না।
পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহম্মেদ বলেন, ‘গ্যাংকার দিয়ে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত সাড়ে ৪১ কিলোমিটার রেলপথ পরীক্ষা করে দেখব। এই পথে ডিজাইন-স্পিড ১২০ কিলোমিটার থাকলেও ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিতে টেস্ট রান চালানো হবে।’
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন উপস্থিত থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেনে পাড়ি দেবেন পুরো পদ্মা সেতু। দুপুরে মাওয়া প্রান্তে প্রেস ব্রিফিং করবেন তিনি।