জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাইদুর রহমান লেলিন আর নেই (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহে রাজিউন)। তিনি শনিবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের সামনে ৩০০ ফিট সড়কে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। সংগ্রামী এ নেতার মৃত্যুতে পটুয়াখালী তথা গোটা দক্ষিনাঞ্চলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন সাইদুর রহমান অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আন্দোলন লড়াই সংগ্রামের সম্মুখ যোদ্ধা পটুয়াখালী জেলা ছাএলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সদস্য পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক সাইদুর রহমান লেলিন আজ (শনিবার) ঢাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
এদিকে ঢাকা সেগুনবাগিচা কোয়ান্টাম সেন্টারে মরহুমের গোসল ও জানাযা শেষে ঢাকা বারডেমের মরচুয়ারিতে নেয়া হয়। পটুয়াখালীর সাবেক মেয়র মোশতাক আহমেদ পিনু, পটুয়াখালী-৩ এর সংসদ সদস্য এর সংসদ সদস্য এসএম শাহাজাদা, সাবেক ছাত্রনেতা ওয়াসীম, বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের রাজীব পারভেজ, দৈনিক আলোর ঠিকানা ও নিউজফ্ল্যাশ২৪বিডি ডটকম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, পটুয়াখালী সরকারী বিশ্ববিদ্যায় কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক ভিপি (পাকসু) আ.শ আলমসহ পটুয়াখালীর বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংঠনের নেতা গুনাগ্রাহীরা উপস্থিত ছিলেন। সাইদুর রহমান লেলিনের আমেরিকা প্রবাসী আত্মীয় ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরার পর ওই দিন বিকেলে জানাযা শেষে পটুয়াখালী কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসকবুকে মৃত্যুতে তার বান্ধু-বান্ধব, দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক সহকর্মীরা শোক জানিয়েছেন।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর তার শোক বার্তা বলেন,
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের দুই দুই বারের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমার স্নেহের সহকর্মী মোঃ সাইদুর রহমান লেলিন ঢাকায় রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছে, তার মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
রাজীব পারভেজ লিখেছেন, বড্ড ভালো মানুষের অকাল মর্মান্তিক বিদায়!
১৯৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলন ও ৯১ এর জাতীয় নির্বাচনের সময় পটুয়াখালীতে একজন সাহসী সুবক্তা হিসেবে শহরময় আপনার বিচরণে আমি যথেষ্ট আকৃষ্ট হয়েছিলাম। বক্তৃতার ভাষাগুলো এখনো আমার মনে আছে। কিন্তু এ কথা পরবর্তীতে আপনাকে বলা হয়নি কখনো। অপূর্ণতা থেকেই গেল!
পটুয়াখালী জেলা যুবদল সভাপতি মো:মনিরুল ইসলাম লিটন লিখেছেন, লেলিন ভাই একজন সজ্জন ভালো মানুষ ছিলেন। আল্লাহ তাআলা লেলিন ভাই’কে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন।
পটুয়াখালীর সাংবাদিক আহসান কবীর রিপন লিখেছেন, এই কষ্ট মেনে নেয়া যায় না,,,
লেলিন ভাই, পুরো নাম সাইদুর রহমান লেলিন। পটুয়াখালী শহরে যে কয়জন মানুষকে আপন বলে জানতাম তাদের একজন। দীর্ঘ দুইযুগের বেশি সময় ধরে তার সাথে সম্পর্ক। কিছুক্ষণ আগে খবর পেলাম তিনি আমাদের মাঝে নেই। খবরটা যেন মাথার উপরে আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো। অনেক স্মৃতি রয়েছে তার সাথে। সর্বশেষ এক সপ্তাহ আগে আমার ভগ্নিপতি তাদের বন্ধু এডভোকেট গোলাম আহাদ দুলু ভাইয়ের চেম্বারে দেখা ও কুশল বিনিময় হয়েছিল।
আজ (শনিবার) সন্ধ্যার পরে রাজধানীর বসুন্ধরা ৩শ ফিট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি (ইন্নালিল্লাহি,,, রাজিউন)। লেলিন ভাইকে নিয়ে লিখতে গিয়ে মনের পর্দায় অনেক স্মৃতি ভেসে আসছে। লেলিন ভাই ছিলেন একজন সাদাসিধে মানুষ। সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ জেলা সাধারন সম্পাদক এই নেতা বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি ছিলেন পটুয়াখালী চেম্বার, চক্ষু হাসপাতাল, ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত। ৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে পটুয়াখালীর রাজপথে যে কজন ছাত্রনেতা অগ্রভাগে ছিলেন তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। ওই সময় তাকে জেল জুলুম হুলিয়া ভোগ করতে হয়েছিল।
পটুয়াখালী শহরের প্রাণকেন্দ্র নতুন বাজারে হোটেল রুচিতায় তার সাথে আমার বেশি দেখা হতো। তাদের বন্ধু সার্কেল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের আড্ডা ছিল এখানে। সেই আড্ডায় মাঝেমধ্যে আমিও সামিল হতাম। অনেক স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন। একসাথে বসে কতদিন চা খেয়েছি তার হিসাব নাই। ১১ বছর আগে সোনার চর ভ্রমণে গিয়েছিলাম একসাথে। আরও কত স্মৃতি,,,,,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের দুইবারের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমার দেখা নির্লোভ, নিরহংকারী সাহসী নেতা সাইদুর রহমান লেলিন ভাই। লেলিন ভাই এর মত নিপাট ভদ্রলোক আজকাল খুব একটা দেখা যায় না। হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধা।