সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করা এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় কিছু বললে পদক্ষেপে নেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের মানুষ যেন ভাবে ভারত আমাদের বন্ধু। এই কাজে দিল্লিও সহযোগিতা করবে ঢাকাকে।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে ছাত্র আন্দোলন দমনে অত্যাধিক বল প্রয়োগের অভিযোগে হতাহতের ঘটনায় তার বিচার চেয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্র স্মুথ করতে চাই। এখন পর্যন্ত পজিটিভ ইনডিকেশন পাচ্ছি। তাদের (বিদেশি) যেসব কনসার্ন, সেগুলো কিন্তু আমাদেরও কনসার্ন। মানবাধিকার নিয়ে কেউ কিছু বললে, সেটা তো আমাদেরও কনসার্ন।’
দেশে স্থিতিশীলতা ফেরার পর নতুন সরকারের মেয়াদ নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে মাধ্যমই এই সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না।’
ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতা নিহতের তদন্ত হবে জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রয়োজন হলে জাতিসংঘের সহায়তা নেওয়া হবে। বিভিন্ন দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু করতে আগামীকাল কূটনীতিক বৈঠকে রাষ্ট্রদূতদের প্রতি আহ্বান জানানো হবে।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী অন্দোলনের সমর্থনে বেশ কয়েকটি দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। তার মধ্যে আরব আমিরাতে বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করা হয়, এমনকি জেলও দেওয়া হয়েছে। ড. ইউনূস নিজেই উচ্চপর্যায়ে কথা বলবেন, চেষ্টা করবেন তাদের যেন শাস্তির সম্মুখীন হতে না হয়।
রোববার (১১ আগস্ট) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন। মতবিনিময়ের শুরুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি আমরা গভীরভাবে দেখছি। তারা কিছুতেই যেন সাফার না করে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি আজ বা কালকের মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা নিজে কথা বলবেন তাদের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। যাতে করে তারা সহায়তা পেতে পারেন।
তিনি বলেন, তারা হয়তো স্থানীয় আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। সে কারণে আমরা সেই দেশকে দোষারোপ করতে পারি না। তাদের যে আইন আছে সে অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু তাদের (প্রবাসী) সেন্টিমেন্ট যেটার কারণে তারা এটার পক্ষে এসেছে তখন তারা হয়তো সেই আইন-কানুনও ভুলে গেছে অনেকে। আমরা চেষ্টা করবো তাদের যেন মুক্ত করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, বিদেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বাড়ানোর বিষয়েও পদক্ষেপ নেবে এই সরকার।