সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সিইসি কাছে নিরাপত্তা চেয়েছে ১৭ জনপ্রতিনিধি

কক্সবাজার-১ আসনে নির্বাচনে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ১৭ জনপ্রতিনিধি। তারা সকলেই এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমের পক্ষের লোক।

মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে আবেদনটি পৌঁছে দেন চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম ও পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউপির চেয়ারম্যান কামাল হোছাইন।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সিইসির কাছে আবেদন দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম।

তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত জনপ্রতিনিধিদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী (চেয়ারম্যান) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের পক্ষে কাজ করতে বিভিন্ন মহল থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হতে পারে, এই শঙ্কায় ১৭ জনপ্রতিনিধির পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদনটি করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। তার পক্ষাবলম্বন না করলে অস্ত্র-মাদক উদ্ধার, অফিস পোড়ানোসহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে বা তুলে নিয়ে প্রশাসনিক হয়রানি-নির্যাতনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যা সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরনের চাপ প্রয়োগ ও অপতৎপরতা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে বড় অন্তরায়।

আবেদনে আরও বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করা নির্বাচন কমিশনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তারা (জনপ্রতিনিধিরা) সেই লক্ষ্যে নিজ নিজ ইউনিয়নে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

জানা যায়, আবেদনে স্বাক্ষরকারী ১৭ জনপ্রতিনিধির মধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন পাঁচজন, নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সাতজন ও জামায়াত সমর্থিত দুজন ইউপি চেয়ারম্যান রয়েছেন। এ ছাড়া দুজন জেলা পরিষদ সদস্য ও একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছেন। জেলা পরিষদ সদস্যদের মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য তানিয়া আফরিন স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের মেয়ে।

এদিকে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পন্ন করা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে একটি নিরপেক্ষ অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা সেই লক্ষ্যে নিজ নিজ এলাকায় আমাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী কাজ করে যাচ্ছি। একই সাথে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটারকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। যা পরোক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশের সহায়ক।

কিন্তু পরিতাপের বিষয়, বর্তমান সংসদ জাফর আলম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ট্রাক গাড়ী প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তার পক্ষে কাজ না করায় এবং বিপক্ষের হাতঘড়ি মার্কার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ করায় তিনি নিজে এবং তার গঠিত নিজস্ব অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী দ্বারা অবৈধ অস্ত্রের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে গুম ও হত্যার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছেন।

কক্সবাজার-১ আসনে লড়ছেন মোট সাতজন প্রার্থী। তারা হলেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম, জাতীয় পার্টির প্রার্থী হোসনে আরা, ওয়ার্কার্স পার্টির আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম, ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী কমরউদ্দিন আরমান ও সংসদ সদস্য জাফর আলমের ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী।

এদিকে পেকুয়ার একটি নির্বাচনী পথসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ২০ ডিসেম্বর চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমকে। সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দিয়ে জাফর আলমকে দলের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হবে মর্মে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ