রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নতুন প্রজন্মকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসটুকু জানাতে পেরেছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন করে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে ২৫ শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালি হত্যাযজ্ঞ চালানোর উদ্দ্যেশ্যে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হয়ে সর্বপ্রথম ফার্মগেইট এলাকায় মুক্তিকামি ছাত্র জনতার ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়।

মুক্তিযুদ্ধে প্রথম ব্যারিকেড তৈরির ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণ এবং জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার (২৫শে মার্চ) এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান, এমপি ও সভাপতি, ২৫ মার্চ কালরাতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড উদযাপন কমিটি।

রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত “গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রী” শিরোনামে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল এর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি।

অনুষ্ঠানে আরো সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদ এমপি, জনাব এ কে আজাদ এমপি, চিত্রনায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন আহমেদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, অধ্যক্ষ, তেজগাঁও কলেজ, জহিরুল হক জিলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ, ইউনিসেফ সুপারস্টার ও টিভি রিপোর্টার সুবহা সাফায়েত সিজদা প্রমুখ।

আলোচনায় সভায় বক্তারা ২৫ মার্চ কালরাতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড এর গৌরবময় ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করেন এবং ফার্মগেইট ব্যারিকেড এর ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখতে ঢাকার ফার্মগেইট এলাকায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। আলোচনা সভার শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড তৈরির ঐতিহাসিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের গৌরবের ইতিহাস। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। তারপর করা হয়েছে ইতিহাস বিকৃতি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলক/ স্মৃতিচিহ্নগুলো মুছে ফেলা হয়েছে। এখন আমাদের নতুন প্রজন্মকে এ গৌরবের ইতিহাসগুলো জানাতে হবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ততকালীন ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান খান কামাল এর নেতৃত্বে ছাত্র জনতা ব্যাকিকেড তৈরি করে একটি প্রশিক্ষিত সেনা বহরকে যেভাবে ২০ মিনিটের মত ফার্মগেইটে আটকে রেখেছিলো তা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের মধ্য অন্যতম স্থান দখল করে রাখবে।’

প্রধান আলোচক শাজাহান খান এমপি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে। এটি ছিলো বিশ্বের ইতিহাসে একটি গণহত্যা। বিশ্বের কাছ থেকে আমাদেরকে এ গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনা বহরকে ব্যারিকেড দিয়ে ফার্মগেইট তথা তেজগাঁওবাসী এক বীরত্বের ইতিহাস রচনা করে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও ফার্মগেইট প্রতিরোধের নেতা আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি তাঁর বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ধারাবাহিক আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছেন। আমরা তাঁর আহবানেই প্রতিটা আন্দোলন- সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। তিনিই ছিলেন আমাদের প্রেরণা। আমরা আজ স্বার্থক। নতুন প্রজন্মকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসটুকু জানাতে পেরেছি।’

তিনি আরো বলেন, ইতিহাসের অংশ হয়ে দাড়িয়ে আছে এ ফার্মগেইট এলাকা। সে রাতে (২৫ মার্চ, ১৯৭১) আমরা ছাত্র জনতা বিশ্বের অন্যতম প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বহরকে প্রায় ২০ মিনিটের মত আটকে রেখেছিলাম। আমরা গাছ কেটে, লোহার চাই দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করেছিলাম, ঢিল, পেট্রোল বোমা ছুঁড়েছিলাম। কিন্তু সেনা বহরটি ২০ মিনিটের বেশি আটকে রাখতে পারিনি। তারপরই এই বাহিনী ঢাকা শহরে নারকীয় হত্যাজজ্ঞ চালায়। কিন্তু সেদিন না পারলেও নয় মাস যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।

নিউজফ্ল্যাশ/এসএস।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ