বুধবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দেশে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

সম্প্রতি দেশে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে; কিন্তু রাজনীতিকদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীল না হলে কখনও একটি সুন্দর সমাজ গঠন সম্ভব হবে না। এতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় প্যানেল আইনজীবীদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, ‘একজন মানুষ, অবশ্যই সংবিধান তাকে রাস্তায় আন্দোলন করার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তিনি আন্দোলন, মিছিল সবই করবেন। অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ তিনিও যদি করেন পুলিশের ওপর আর পুলিশ যদি অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে; দুটিই কিন্তু অপরাধ। দুটিই কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। কারণ, যিনি রাস্তায় আন্দোলন করবেন তার মানবাধিকার আছে, যে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন তারও কিন্তু মানবাধিকার আছে। এ বিষয়টি মনে হয় আমরা গুলিয়ে ফেলি।’

প্যানেল আইনজীবীদের উদ্দেশে ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব আইনজীবীদের। লিগ্যাল এইডের মতো মানবাধিকার প্যানেল আইনজীবীদের কাজ করতে হবে। বিচারপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়ালে মনে রাখবেন, আপনি মানবাধিকারকর্মী। নিজ পেশা ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘শুধু ভয়ংকর আসামিদের আদালতের অনুমতি নিয়ে ডান্ডাবেড়ি পরানোর কথা আমরা রায়ে বলেছি। কারণ, ডান্ডাবেড়ি না থাকায় কিছুদিন আগে ঢাকার আদালত থেকে আসামিরা পালিয়েছে। আবার মামলার এজাহারে আসামির নাম বিকৃত করে উপস্থাপনও মানবাধিকার লঙ্ঘন।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মৌলিক অধিকার একেক দেশে একেক রকম হলেও সারাবিশ্বে মানবাধিকার কিন্তু একই। মানবাধিকার প্রয়োগ হয় আইনের মাধ্যমে। এ জন্য আইন বিভাগ আইন প্রণয়ন ও বিচার বিভাগ আছে আইন প্রয়োগের প্রয়োজনে। তাই মানবাধিকারের সঙ্গে আইনজীবীদের সম্পর্ক আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের সঙ্গে বর্ডার ভারত ও মিয়ানমারের। সমুদ্রসীমায় থাইল্যান্ডের থাকলে থাকতে পারে। আমার মনে হয়, বর্ডার ট্রাইব্যুনালের চিন্তা একেবারে খারাপ না। সরকার বিষয়টি চিন্তা করতে পারে।’

কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মানবাধিকার সুরক্ষা, উন্নয়ন ও সুসংহত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে আইনগত সহায়তা দিতে কমিশন প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় প্যানেল আইনজীবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য সেলিম রেজা, পরিচালক কাজী আরফান আশিক প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানী, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান প্রমুখ। কর্মশালায় কমিশনের ২৫০ প্যানেল আইনজীবী অংশ নেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ