বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে ভারত থেকে ভিসা সেন্টার সরিয়ে বাংলাদেশে বা প্রতিবেশী অন্য কোনো রাষ্ট্রে স্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। দুপুর ১২টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার।
বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত করায় অনেক শিক্ষার্থী দিল্লি গিয়ে ইউরোপের ভিসা নিতে পারছেন না। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় ভিসা অফিস ঢাকা অথবা প্রতিবেশী কোনো দেশে স্থানান্তর হলে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়ই উপকৃত হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে বুলগেরিয়া বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করেছে। অন্য দেশগুলোকেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণের আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। পাশাপাশি পারস্পরিক অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কেও কথা বলেন তারা।
প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো অত্যাচার, শোষণ, বলপূর্বক গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিষয়ে প্রতিনিধিদের জানান।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ বিষয়ে ছড়ানো অপতথ্য মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সহায়তা চান।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা যে ব্যাপক টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে। ওই টাকা দিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
বৈঠকে সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ইইউ প্রতিনিধিরা। পরামর্শ ও সুপারিশ জানিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।