নোটিশ ছাড়াই অর্ধ শত বছরের ১৪৭ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রশাসন গুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় শুক্রবার ব্যবসায়ীরা দোকানপাট ও পায়রা নদীতে খেয়া চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন তারা। পুর্নবাসনের দাবীতে ওইদিন বিকেলে ছোটবগী বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। খেয়া চলাচল বন্ধ ও সড়ক অবরোধ করে রাখায় দুর্ভোগে পরেছে হাজার হাজার মানুষ। পুর্নবাসন দেয়া না পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন।
জানাগেছে, দক্ষিণাঞ্চলের তালতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ছোটবগী বাজার। প্রতি শুক্রবার এখানে হাট বলে। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম গরু ও ধানের বাজার বসে এখানে। এ বাজার থেকে সরকার প্রতিবছর কোটা টাকা রাজস্ব আদায় করে। গত ৫০ বছর পুর্বে বাজার সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের উপরে ব্যবসায়ীরা ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে নোটিশ ছাড়াই বরগুনা ভুমি অধিগ্রহন শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোঃ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন ভেকু মেশিন দিয়ে ১৪৭ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দিয়েছেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দেয়ায় ওই বাজারের ১৪৭ ব্যবসায়ী মালামাল নিয়ে বিপাকে পরেছেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নোটিশ না দিয়ে প্রশাসন ১৪৭ ঘর ভেঙ্গে ফেলেছে। প্রতিষ্ঠানের মালামাল সরাতে দেয়নি। অনেক প্রতিষ্ঠানের মালামাল নষ্ট হয়েছে।এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার ব্যবসায়ীরা হাট বসতে দেয়নি। পায়রা নদীতে খেয়া চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখা হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পরেছে হাজার হাজার মানুষ। শুক্রবার বিকেলে ব্যবসায়ীসহ সহস্রাধিক মানুষ বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে ব্যবসায়ীদের পুর্নবাসন না দেয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা পুর্নবাসনের দাবী জানিয়েছেন। বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন সিকদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন চুন্নু ছোটবগী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ইজারাদার মোঃ মজিবুর রহমান বিশ্বাস, ইউপি সদস্য মোঃ রুহুল আমিন, সাবেক ইউপি সদস্য সুলতান বয়াতি, মর্তুজা মোল্লা, যুবলীগ নেতা বশির কাজী, নাশির তালুকদার, বশির মাষ্টার, দুলাল সিকদার ও ক্ষতিগ্রস্থ রোকেয়া বেগম প্রমুখ।।
যাত্রী মোঃ সুমন মিয়া, শাহ আলম ও জালাল বলেন, দ্রুত কাজে বরগুনা যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু ছোটবগীর পায়রা নদীর খেয়া বন্ধ থাকায় যেতে পারছি না।
অটো রিক্সা চালক মোঃ আলম মিয়া, কৃষক শহীদুল ও ইসমাইল হাওলাদার বলেন, সড়কে অবরোধ ও সাপ্তাহিক হাট না বসায় বাজার সদায় করতে পারিনি। এতে সমানে সপ্তাহে চরম কষ্টে কাটাতে হবে।
ছোটবগী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, নোটিশ ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দেয়ায় ব্যবসায়ীদের অপুরনীয় ক্ষতি করেছে। যতদিন পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের পুর্নবাসন দেয়া না হতে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন অব্যহত থাকবে।
তালতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সাপ্তাহিক হাট বসেনি, দোকানপাট ও খেয়া চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সরকারের সাধ্যের মধ্যে রেখে পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।