ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে দুর্ঘটনাকবলিত ‘সাগর নন্দিনী-২’ নামে তেলবাহী জাহাজে ফের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। জাহাজ থেকে তেল অপসারণের সময় এ ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পরে জাহাজে আগুন লাগে। এতে ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১১ জন দগ্ধ হয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় নদীতে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে সাগর নন্দিনী-৪ নামে আরেকটি জাহাজ নোঙর করা রয়েছে। সেটিতেও আগুন ছড়িয়ে যেতে পারে।
আহতরা হলেন- কনস্টেবল পলাশ (২৫), এএসআই গণেশ (৪২), এসআই হাকিম (৫০), কনস্টেবল মেহেদী (২৭), কনস্টেবল শওকত (২৩), দ্বীপ (২৪), নৌপুলিশের এটিএসআই হেলাল উদ্দিন (৫৫), নায়েক সিদ্দিক (৪৫), এসআই মোস্তফা (৪৩), শ্রমিক হালিম হাওলাদার (৫০), জাহাজ নন্দিনী-৪ এর বাবুর্চি কাইয়ুম (৩২)।
আহতদের মধ্যে শওকত ও দ্বীপ নামে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, আহতদের মধ্যে গুরুতর দগ্ধদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত শ্রমিক হালিম হাওলাদারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকেও বরিশাল পাঠানো হবে। হঠাৎ বিস্ফেরণের বিকট শব্দে ঝালকাঠি শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সাগর নন্দিনী-২ বিস্ফোরণের ঘটনার তৃতীয় দিনের উদ্ধার অভিযানে নিখোঁজ আরও দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিস্ফোরণে নদীতে পড়ে যাওয়া জাহাজের ভাঙা অংশ থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম।
এর আগে রোববার জাহাজটির ইঞ্জিনরুম থেকে গ্রিজার আব্দুস সালাম হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। এ নিয়ে জাহাজটির নিখোঁজ চারজনের মধ্যে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম জানান, বিস্ফোরণের পর সাগর নন্দিনী-২ জাহাজটির একটি অংশ উড়ে গিয়ে সুগন্ধা নদীতে পড়েছিল। সোমবার সকাল থেকে জাহাজটির অংশ উদ্ধারে কাজ শুরু করে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘নির্ভিক’। পরে বেলা ১১টার দিকে ভাঙা অংশটি উদ্ধারের পর তাতে দুই জনের লাশ পাওয়া যায়। তবে তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
ঈদের দিন বৃহস্পতিবার সাগর নন্দিনী-২ ট্যাংকারটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর পাড়ে পদ্মা অয়েল কোম্পানির জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে আসে। ৯ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে সেটি নোঙর করা ছিল রাজাপুর গ্রামের কাছে।
শনিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে হঠাৎ করেই ট্যাংকারটিতে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। এতে জাহাজের পাঁচজন দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল বলেন, লাশ উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পরও আমাদের ১৩ জন পুলিশ সদস্য জাহাজটি পাহারা দিচ্ছিল। হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণে তারা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমাদের কোনো পুলিশ সদস্য নিখোঁজ হয়নি।
আজ সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তেলবাহী জাহাজটিতে আগুন জ্বলছিল।