রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি থানার বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম। তিনি এসেছেন জাতীয় কবিতা উৎসবে নিজের নাম নিবন্ধন করতে। উদ্দেশ্য কবিতা উৎসবে স্বরচিত কবিতা পাঠ। তার মতো এমন কবিরা প্রতিদিন আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)’র দোতলায় শহীদ মুনীর চৌধুরী মিলনায়তন সংলগ্ন কক্ষে । সেখানে চালু করা হয়েছে উৎসব দফতর। সেখানে প্রতি শনি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কবিদের নাম রেজিস্ট্রেশন চলছে। বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু থাকে।
শুধু শুক্রবার এসময় শুরু হয় বিকেল তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত। এছাড়াও আগ্রহী কবিদের জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় কবিতা উৎসব-২০২৫ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় কবিতা পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে প্রতিবছরের মতো আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক কবি মোহন রায়হান এ প্রসঙ্গে বলেন, ’স্বাধীনতা-সাম্য সম্প্রীতির জন্য কবিতা’ স্লোগানে আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৫।’
তিনি বলেন, এবারের উৎসবে যারা কবিতা পড়বেন তাদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে। নিবন্ধন করা কবিরা একটি করে স্বরচিত কবিতা (আনুমানিক ২০ লাইন) পাঠ করতে পারবেন। নিবন্ধনের সময় দুটি স্বরচিত কবিতার দুটি করে কপি, এনআইডি বা জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি ও এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দিতে হবে। জমা দেওয়া কবিতা দুটি থেকে উৎসবে পাঠ করার জন্য একটি কবিতা নির্বাচিত করে দেওয়া হবে। পঠিত কবিতাগুলো থেকে একটি নির্বাচিত কবিতা সংকলন প্রকাশ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এ উৎসবে ফ্যাসিবাদ বা সাম্প্রদায়িকতার পক্ষে, দল-পরিবার-গোষ্ঠী-ব্যক্তিবন্দনা, পতিত স্বৈরাচারের বন্দনা, দলীয় বা ধর্মীয় উস্কানিমূলক, স্বাধীনতাবিরোধী, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানবিরোধী কোনও কবিতা পাঠ করা যাবে না। ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে উৎসবের বিভিন্ন পর্ব আয়োজিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই উৎসব আয়োজনের জন্য কবি মোহন রায়হানকে আহ্বায়ক, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন ও কবি শাহীন রেজাকে যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং কবি মানব সুরতকে উৎসব সমন্বয়ক করে একটি উৎসব পরিষদ এবং জাতীয় কবিতা পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কবিদের নেতৃত্বে ২৪টি উপপরিষদ গঠন করা হয়েছে।
দু’দিনব্যাপী এ উৎসবের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, কবিতা বিষয়ক আলোচনা, স্বরচিত কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি এবং দ্বিতীয় দিনে কবিতা বিষয়ক সেমিনার, স্বরচিত কবিতাপাঠ, কবিতার গান ও নৃত্যের আয়োজন থাকবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লেখক ও কবিদের এ উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরেও জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার দেওয়া হবে।
