চট্টগ্রামে গান গেয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে তাকে পেটানোর ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, নিল রঙের গেঞ্জি এবং জিন্স প্যান্ট পড়া এক যুবক ঢুলছেন। যার দুই হাত বেঁধে রাখা হয়েছে স্টিলের পাইপের সঙ্গে। আর এই যুবককে ঘিরে গোল হয়ে কয়েকজন যুবক চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা’ গান গাইছে।
ভিডিওতে কয়েকজন যুবকের হাতে লাঠিও দেখা গেছে। পরে মারধর করা তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ আগস্ট এ ঘটনা ঘটেছে। আর এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে শনিবার।এরপরই ভিডিওটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
বেঁধে মারধর করা যুবকের নাম মো. শাহাদাত হোসেন (২৪)। তিনি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভুঁইয়া বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে স্ত্রী শারমিন আক্তারের সঙ্গে থাকতেন।
তাকে চট্টগ্রাম নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় মারধর করা হয়। গত ১৪ আগস্ট রাতে নগরে প্রবর্তক এলাকা থেকে পুলিশ শাহাদাতের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহাদাতের চাচা মো. হারুন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে শাহাদাতের চাচা উল্লেখ করেন, চট্টগ্রামের বয়লার কলোনির বাসা থেকে কাজের উদ্দেশ্যে গত ১৩ আগস্ট বাসা থেকে বের হন শাহাদাত।
কিন্তু সারাদিন বাসায় না ফেরায় রাতে ফোন করে শাহাদাতের নম্বর বন্ধ পান তার স্ত্রী। এরপর দিন প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনাশাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তার চাচা ফেসবুকে লাশের ছবি দেখে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে এসে লাশ শনাক্ত করেন। সঙ্গে শাহাদাতের স্ত্রীও ছিলেন। তবে মারধরের শিকার ব্যক্তি যে শাহাদাত, সেটি জানা গেছে শনিবার তার স্ত্রী ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে শনাক্ত করার পর।
পুলিশ জানিয়েছে, শাহাদাত হোসেনের মাথা, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটা তারা দেখছেন। ভিডিওতে কয়েকজন তরুণকে দেখা গেছে। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারলে শাহাদাত হত্যার রহস্য উদঘাটন করা যাবে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ভাইরাল ভিডিওটি দেখেছি। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শাহাদাতের স্ত্রী মারধরের শিকার ব্যক্তি শাহাদাত বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে যারা তাকে মারধর করেছে, তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারিনি। তাদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।