সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগে আমতলীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

তিন লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে চাকুরী না দেয়ার অভিযোগে বরগুনার আমতলী উপজেলার দক্ষিণ রাওঘা নুর আল আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সামসুল আলমের বিরুদ্ধে জিয়াউল হক বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে।
আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিককে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান আজ সোমবার এ মামলা তদন্তের দিন ধায্য করেছেন। ওই প্রধার শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরো ৬/৭ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকুরী না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও প্রধান শিক্ষক তার অনিয়ম ধামাচাপা দিকেই পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন না করে বারবার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধা ও তার স্ত্রী মোসাঃ শিমুল ইসলামকে সভাপতি করে এডহক কমিটি গঠন করছেন বলে অভিযোগ অভিভাবক ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের। এতে ক্ষুব্দ বিদ্যালয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী। দ্রুত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থাসহ পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের দাবী জানিয়েছেন অভিভাবক ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

জানাগেছে,১৯৭৪ সালে আমতলী উপজেলার দক্ষিণ রাওঘা গ্রামে শিক্ষানুরাগী মোঃ আফসার উদ্দিন মাষ্টার দক্ষিণ রাওঘা নুর আল আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। নব্বই দশকে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে মোঃ সামসুল আলম নিয়োগ পান। তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েই শুরু করেন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা।

গত ত্রিশ বছরে তিনি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতাকে যথাযথ সম্মানটুকু দেয়নি এমন অভিযোগ প্রতিষ্ঠাতার জেষ্ঠ পুত্র গাজী মোঃ গোলাম মোস্তফার। ২০২০ সালে প্রধান শিক্ষক নিজের মত করে তার আত্মীয় তৎকালিক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধাকে সভাপতি করে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করেছেন। ওই কমিটির মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হয়। গত তিন বছরে তিনি পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করেননি। প্রধান শিক্ষক বারবার হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা ও তার স্ত্রী মোসাঃ শিমুল ইসলামকে এডহক কমিটির সভাপতি করে আসছেন। বিদ্যালয় অভিভাবক ও স্থানীয়দের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক তার নিজের অনিয়ম ধামাচাপা দিতেই পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন না করে বারবার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীকে এডহক কমিটির সভাপতি করছেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে। কমিটি না থাকায় প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসছেন না বলে অভিযোগ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্মচারী নিয়োগের নামে ৬/৭ জনের কাছ থেকে অন্তত অর্ধকোটি টাকা ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জিয়াউল হক নামের একজন প্রধান শিক্ষক মোঃ সামসুল আলমের বিরুদ্ধে গত ১ মার্চ আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালতে বিচারক মোঃ আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিককে তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান এ মামলা তদন্তের জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য্য করেছেন।

বোববার সরেজমিনে বিদ্যালয় ঘুরে দেখাগেছে, বিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আসলেও কোন শিক্ষক নেই। দুই ঘন্টা পরে ( ১১ টায়) প্রধান শিক্ষক আসলেও কোন সহকারী শিক্ষক আসেননি। ছাত্র-ছাত্রী তাদের ইচ্ছামত ছুটাছুটি করছে।

শিক্ষার্থী তাহসিন, রাকিব, মুছা ও মোঃ রাহাত বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়মিত ক্লাসে আসেন না। তিনি না আসার কারনে সহকারী শিক্ষকরাও নিয়মিত ক্লাসে আনেন না। ফলে ঠিকমত ক্লাসে পাঠদান হচ্ছে না। তারা আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক প্রায়ই বিদ্যালয় না এসে তাবলিগে যান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ