ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহন না করে এবং ক্ষতিপুরন না দিয়ে একের পর এক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে গোপালগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। বৈধ জমির মালিকদের ক্ষমতার দাপট এবং হুমকি-ধামকি দিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করছে পৌর প্রশাসন।
এ প্রসঙ্গে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, বৈধ জমির মালিকদের কাছ থেকে কাগজাদি নেয়া হয়েছে। বৈধ জমিগুলি অধিগ্রহনভুক্ত করে মালিকদের ক্ষতিপুরন করা হবে।
জানা গেছে জেলা শহরের নব নির্মিত ঈদগাহ এলাকায় এসএ ৯০ নং মৌজাধীন ১ নং খতিয়ানের ১/৩৫৭৮ নং দাগ যাহা হাল ১০৭ নং মানিকদাহ মৌজাধীন ১৬৩৯ নং খতিয়ানে ৩০১২ নং দাগের ১৩ শতাংশ জমির ক্রয়সূত্রে মালিক এম.মাহাবুব আলী এবং এম.মাসুদ আলী ।
গোপালগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এম.মাহাবুব আলী সোহেল এবং মরহুম এম.মাসুদ আলী স্বপনের জমি অধিগ্রহন না করে ইদগাহ নির্মান সম্পন্ন করেছে এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে। চলতি বছরের প্রথম দিকে ঈদগাহের নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোপালগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, জমির বৈধ মালিকানা থাকলে ক্ষতিপূরন পাবে জমি মালিকরা। তবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বা সাবেক মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু কি কারনে জমি অধিগ্রহন না করে ঈদগাহ নির্মান কাজ করিয়েছেন তা জানা নেই। আমরা এখনও ঈদগাহ হস্তান্তর করিনি। জমি মালিকরা পৌরসভার মেয়র বরাবর লিখিত আবেদন করলে ক্ষতিপূরন পাবেন বলে আশা করি।
ক্ষতিপূরনের আবেদন করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে এম.মাহাবুব আলী সোহেল এবং মরহুম এম.মাসুদ আলী স্বপনের স্ত্রী বনি আসমা উল হুসনা বলেন ,আমরা সম্প্রতি গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বরাবর আবেদন করেছি ক্ষতিপুরন চেয়ে।
ক্ষতিপূরন দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, জমির মালিকরা বৈধ কাগজাদি নিয়ে পৌরসভার মেয়রের নিকট আবেদন করলে ক্ষতিপূরন পাবেন বলে আশা করি।
গোপালগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র শেখ রকিব হোসেনের কাছ থেকে এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সময় দেননি।
এদিকে পৌরসভার পাঁচুড়িয়া খালের সাথে মধুমতি লেকের পুন:সংযোগ ঘটিয়ে পানি প্রবাহ সচল করেছে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষ । পানি প্রবাহ সচল করার কাজ চলাকালে পৌরসভা মেয়র শেখ রকিব হোসেনের সহযোগীতায় সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো: মামুন খানের নেতৃত্বে কিছু বৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পাঁচুড়িয়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্থদেরকে ক্ষতিপুরনের আশ্বাস দেয়া হয়। এটি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বিশেষ প্রকল্প বলে জমির মালিকদের জানানো হয় বিধায় কেউ কোন বাধা দেননি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত পাঁচুড়িয়া খাল বলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশে খালটি খনন করে সংস্কার করা হচ্ছে মর্মে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে।
খাল খননের ফলে পাঁচুড়িয়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ মো: টিপু মিয়ার পরিবারের সদস্যরা এবং এম.মাহবুব আলী সোহেল,বনি আসমাউল হুসনা প্রমুখ বলেন, যে জমি থেকে স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে সে জমির ক্রয়সূত্রে বৈধ মালিক আমরা। আমাদের নিকট যথাযথ কাগজাদি রয়েছে। আমাদের মূল্যবান ভবনগুলি ভাঙ্গার সময় আমরা বারবার জেলা প্রশাসক,এসি ল্যান্ড এবং গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সাহেবের সাথে কথা বলেছি । তারা আমাদেরকে ক্ষতিপূরন এবং পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেও গত শুক্রবার পর্যন্ত কোন অধিগ্রহনের কাগজাদি সরবরাহ করেন নাই,পুনর্বাসনেরও পদক্ষেপ নেন নাই।