ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ১ নভেম্বর থেকে চিনের সকল পণ্যে বাড়তি ১০০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হবে। কারণ, বিরল খনিজের রফতানি নিয়ে তারা যে পদক্ষেপ করেছে, তা কেউ করে না।
চিনকে নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। সব ঠিক হয়ে যাবে! চিনের সব পণ্যে ১০০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের দু’দিনের মাথায় সুরবদল করে এমনটাই জানালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বার্তা দিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে। বিরল খনিজের বাণিজ্য এবং এই পণ্যের উপর চিনের রফতানি নিয়ন্ত্রণের নীতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। ঘোষণা করেছিলেন, ১ নভেম্বর থেকে চিনের সকল পণ্যে বাড়তি ১০০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হবে। কারণ, বিরল খনিজের রফতানি নিয়ে তারা যে পদক্ষেপ করেছে, তা কেউ করে না। এর পর বেজিঙের তরফে রফতানি নিয়ন্ত্রণ নীতির ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারিও দেয় জিনপিঙের প্রশাসন। তার পরেই দেখা গেল ট্রাম্প সুর বদল করেছেন। যদিও শুল্ক প্রত্যাহারের কথা তিনি কিছু বলেননি।
রোববার (স্থানীয় সময়) ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে চিনকে নিয়ে চারটি বাক্য লিখেছেন- ‘‘চিনকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। সব ঠিক হয়ে যাবে। সম্মানীয় প্রেসিডেন্ট জিনপিঙের সময় একটু খারাপ যাচ্ছিল। গোটা চিন অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ুক, এটা উনি চান না, আমিও চাই না।’’ এর পর আমেরিকার অবস্থান ব্যাখ্যা করে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘আমেরিকা তো চিনকে সাহায্যই করতে চায়, আঘাত করতে নয়!’’
বেজিঙের তরফে রফতানি নিয়ন্ত্রণ নীতি ব্যাখ্যা করে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল, তাতে বলা হয়, রফতানিতে কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে তা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে মাত্র। চিনের আইন অনুযায়ী এই ধরনের সিদ্ধান্ত বৈধ। এ বার থেকে বিরল খনিজ চিন থেকে কিনতে গেলে সংশ্লিষ্ট দেশকে একটি বৈধ লাইসেন্স সঙ্গে রাখতে হবে। সেই লাইসেন্স পাওয়াও খুব কঠিন হবে না বলে দাবি করেছে চিন প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, সামরিক ক্ষেত্রে বিরল খনিজের ব্যবহার তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। বিশ্বে শান্তি ফেরানোর জন্য তা জরুরি। অসামরিক যে কোনও উদ্দেশ্যে এই খনিজ আমদানির আবেদন গ্রাহ্য করা হবে।
আমেরিকার ১০০ শতাংশ শুল্কের হুঁশিয়ারির পাল্টা দিয়েছিল বেজিং। বলা হয়েছিল, এটা আমেরিকার ‘দ্বিচারিতা’র নিদর্শন। যদি ১০০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কের হুমকি কার্যকর করা হয়, তবে পাল্টা পদক্ষেপ করবে চিন। সম্ভাব্য বাণিজ্য-যুদ্ধের আশঙ্কায় তারা ভীত নয়, দাবি করেন জিনপিঙের বাণিজ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র।
ট্রাম্প দ্বিতীয় বার আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুল্ককে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারের নীতি নিয়েছেন। চিনের সঙ্গে গত মে মাসে আমেরিকার শুল্ক-দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছিল। দুই তরফেই আরোপিত শুল্কের পরিমাণ ছাড়িয়ে গিয়েছিল ১০০ শতাংশের গণ্ডি। এর পর শুল্কযুদ্ধে সাময়িক বিরতি চলেছে। বর্তমানে চিনের পণ্যে ৩০ শতাংশ মার্কিন পণ্য প্রযোজ্য হয়। দু’দিন আগে ট্রাম্পের ঘোষণায় আমেরিকা-চিন শুল্কযুদ্ধ নতুন করে শুরু হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। শেয়ার বাজারেও ধস নামে। তবে ট্রাম্প কিছুটা সুরবদল করলেন।