চলতি বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তর থেকে ভার্চুয়ালি বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ সময় তিনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চলাকালে কোনো কৃষক অপমানিত কিংবা হয়রানির শিকার হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘গোডাউনে ধান দিতে এসে কোনো শ্রমিক যেন কৃষকদের হয়রানি না করেন সেজন্য ডিসি ও আমাদের কর্মকর্তাদের নজর রাখতে বলেছি। কোনো কৃষক যেন কোনভাবে অপমানিত ও হয়রানি না হয়, সেই বিষয়ে আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকব। যদি কেউ কোনো কৃষককে অপমান বা হয়রানি করে তবে আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
অভিযোগ জানাতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দুটি নম্বর দিয়ে দেওয়া হবে বলেও এসময় জানিয়েছেন মন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, এবারের বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রমকে সামনে রেখে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দুটি নম্বর দিয়ে দেওয়া হবে, যেন ওই নম্বরগুলোতে কৃষকরা ফোন করে হয়রানির কথা জানাতে পারেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি ধান ও চালের গুণগত মান যাতে ভালো হয়, কোয়ালিটির সঙ্গে যাতে কোনো আপোষ না হয় সেটাই আমাদের নির্দেশনা।
লক্ষ্যমাত্রা প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী জানান, এবারের বোরো মৌসুমে ১৭ লাখ টন ধান ও চাল কিনবে সরকার। এর মধ্যে ৫ লাখ টন ধান, ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল, এক লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি বোরো ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ধান ৩২ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি সিদ্ধ চাল ৪৫ টাকায় এবং আতপ চাল ৪৪ টাকায় সংগ্রহ করা হবে এবার। একইসঙ্গে ৩৪ টাকা দরে ৫০ হাজার টন গম কেনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
এদিকে ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চললেও জুনের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ অর্জনের নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন। আরসি ফুড (আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক), ডিসি ফুড (জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক), কৃষি উপপরিচালক, কৃষক, চালকল মালিকরা ছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের নির্দেশনা দিয়েছি।
সাধন চন্দ্র মজুমদার আরও বলেন, সঠিক সময়ে ধান, চাল ও গম সংগ্রহ করতে হবে। আমরা জুন মাসের মধ্যে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ করার জন্য বলেছি। হাওরের ধানকে প্রাধান্য দিয়ে হাওয়ের বরাদ্দ বেশি দিয়েছি। কৃষক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য প্রতি ইউনিয়নে তিনজন কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তার কাছে একটি করে ময়েশ্চার মিটার (ধানের আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র) দেওয়া হয়েছে। যে কৃষকরা ধান দেবেন বলে আবেদন করেছেন, তালিকা পাঠিয়েছেন, তাদের বাড়ি গিয়ে মিটার দিয়ে ধান পরীক্ষা করে আসবেন কর্মকর্তারা। আর্দ্রতা ১৪ শতাংশের বেশি থাকলে তাদের বলবেন আরও শুকিয়ে ১৪ শতাংশে নিয়ে আসার জন্য। যাতে কৃষক হয়রানি না হয় সেজন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছি এডিবি ফান্ডের কৃষির অংশ থেকে আরও ময়েশ্চার মিটার কিনে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিতরণের জন্য।