শনিবার, ১লা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কুয়াকাটা সৈকতের ঝূঁকিপুর্ণ সরদার মার্কেট ৭ দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ

সমুদ্রের পানির লেভেল দখল করে তোলা আলোচিত ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা ‘সরদার মার্কেট’ যেন সমুদ্রের মালিকানা দাবি করে দাঁড়িয়ে আছে। এটি ধ্বসে পর্যটক সহ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের প্রাণহানির শঙ্কা দেখা দেয়ায় এবার এটি অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন।

কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক অনুমোদনহীন এই ঝূঁকিপুর্ণ স্থাপনা সরদার মার্কেট অপসারণে সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।

কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসীন সাদেক নোটিশে উল্লেখ করেছেন, ‘পৌরসভার অনুমোদন ব্যতীত এবং মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন ৫১৬২/২০১১ অনুসারে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বেড়িবাঁধের বাইরে জিরো পয়েন্টে লোহার পাইপ দিয়ে কাঠের পাটাতনের উপর ঢালাই দিয়ে প্রায় ৪০ ফুট উচ্চতার তিন তলা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। যা ইমারত আইন, ১৯৫২, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এবং গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৮ জুলাই, ২০১৬ তারিখের ৪৩৮ নম্বর স্মারকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের সুস্পষ্ট লংঘন। এই ঝূঁকিপুর্ণ স্থাপনা ধ্বসে গিয়ে যে কোন সময় পর্যটকের প্রাণহানি ঘটতে পারে। ইতিপূর্বে পৌরসভার প্রকৌশলীগণ আপনাকে ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন। তা সত্ত্বেও নির্দেশ অমান্য করে স্থাপনা বার্ধিত ও সম্প্রসারণ করেছেন। আগামি ৭ দিনের মধ্যে অপসারণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৭ এবং ২১ অক্টোবরের মাসিক সভায় সরদার মার্কেটটি ঝূঁকিপুর্ন স্থাপনা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশে এই মার্কেটটির স্থাপনায় সাগরের জোয়ারের পানির ঝাপটা লাগে। অস্বাভাবিক জোয়ারে সৃষ্ট জ্বলোচ্ছাস তান্ডব চালায়। এ কারণে ওই মার্কেটের দোকানিরাও এটি ধ্বসে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দোকানি জানান, বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের ঢেউ এসে প্রবলবেগে ঝাপটা দেয়। ভয় লাগে। মনে করেন, ‘এই বুঝি সব ভেসে গেল।’

সরদার মার্কেটের মালিক সাজেদুল ইসলাম হিরু মিয়া জানান, এটি তার মালিকানাধীন জমি। এ নিয়ে প্রশাসনের সাথে কয়েকবার বৈঠক হয়েছে। আর এই স্থাপনা ঝূঁকিপুর্ণ নয় বলেও দাবি তার। প্রকৌশলীর পরামর্শ নিয়েই স্থাপনার কাজ করেছেন বলে দাবি করেন। তিনিও এখানে ব্যাপক অর্থ লগ্নি করে বিপদে পড়েছেন বলেও জানান। এটি নিয়ে পটুয়াখালী জেলা যুগ্ম জজ আদালতের একটি আদেশ রয়েছে বলেও হিরু মিয়া দাবি করেন।

কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদ বলেন, তিনি বীচ পরিদর্শন করেছেন। এটি একটি অনুমোনহীন ঝূঁকিপুর্ণ স্থাপনা। সৈকত এলাকায় পর্যটকের সবসময় পদচারণা থাকছে। এটি ধ্বসে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। পর্যটকের জন্য নিরাপদ সৈকত রক্ষায় সরকারি নির্দেশনা সবাইকে মানতে হবে বলেও তিনি জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ