পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আগামী ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব রাস পূর্ণিমা ও রাসমেলা। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলা ও লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে প্রতিবছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। এ উৎসব এখন কুয়াকাটার সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজন হিসেবে পরিচিত।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যার পরে কুয়াকাটা শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আয়োজকরা। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নীহার রঞ্জন মণ্ডল।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার হামিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক মো. ইয়াসীন সাদেক, ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান, মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহমুদ হাসান, কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম.এ. মোতালেব শরীফ, কুয়াকাটার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

আয়োজকরা জানান, ৪ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে রাস উৎসব ও রাসমেলা। এ উপলক্ষে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, পরিচ্ছন্নতা ও দর্শনার্থীদের সেবায় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নীহার রঞ্জন মণ্ডল বলেন, “রাস পূজা এখন শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একত্রিত হয়ে এই উৎসব উপভোগ করেন। এতে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন খাতও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।”
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “রাস উৎসবকে ঘিরে বিপুল জনসমাগম হয়। এজন্য জেলা পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের সহযোগিতায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক মো. ইয়াসিন সাদেক বলেন, পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস উৎসবের দর্শনার্থী ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা প্রস্তুত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার হামিদ বলেন, “রাস উৎসব কুয়াকাটার ঐতিহ্যের অংশ। দর্শনার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে উৎসব উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটা সৈকতে সৃষ্টি হয় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, আনন্দ ও মিলনমেলার এক অপূর্ব পরিবেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ভক্ত ও পর্যটকরা গঙ্গাস্নান ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে অংশ নেন। যা উপকূলীয় পর্যটন শহর কুয়াকাটাকে এক উৎসবমুখর করে তোলে।





