কুয়াকাটায় সরকারী জমি উদ্ধার অভিযানে উচ্ছেদ হওয়া ৪ শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শতশত মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। আজ বুধবার বেলা ১১ টায় কুয়াকাটা পৌরসভার হুইছান পাড়া ও পাঞ্জুপাড়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এ মানববন্ধন করে।
উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর থাকার বিকল্প জায়গা না থাকায় এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে তারা। কোন কোন পরিবারের রান্নার চুলা জ্বললেও অধিকাংশ পরিবারের চুলা জ্বলছেনা। অভিযানে বিশুদ্ধ পানির জন্য স্থাপিত গভীর নলকূপও ভেঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন। এমন সব অভিযোগ নিয়ে আধা কিলোমিটার বেড়িবাঁধজুড়ে হাজারো মানুষ মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে। মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী মানুষের প্রশ্ন বাপ দাদার ভিটেমাটি ছেড়ে এখন তারা কোথায় গিয়ে থাকবেন? এখন খোলা আকাশের নিচে বেড়া দিয়ে, তাবু টানিয়ে বসবাস করছে তারা। স্থানীয় রাজনীতিবিদসহ কেউ তাদের পাশে দাড়ায়নি। খোঁজখবর নেয়নি প্রশাসনও। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষদের দাবী উচ্ছেদ হওয়া এই ভূমি তাদের। পুর্ণবাসন না হওয়া পর্যন্ত তারা কোথাও যাবেন না। আর যাওয়ার জায়গাও নেই তাদের।
ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন কর্মসুচিতে অংশ নেয়া পাঞ্জুপাড়ার ভুক্তভোগী আব্বাস কাজী জানান, কোন প্রকার আগাম নোটিশ বা সময় না দিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে বাড়িঘর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে না, উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর।
হাসেনপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রব হাওলাদার বলেন, উচ্ছেদকৃত পরিবাগুলোর শিশুরা ক্লাশে আসছেনা। শিশুদের স্কুলে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। অপর এক সহকারী শিক্ষক সোহরাব হোসেন মিন্টু বলেন, খোলা আকাশে নিচে বসবাস করায় দূর্ভোগে রয়েছে পরিবার গুলো। ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে শিশু শিক্ষার্থীরা।
কুয়াকাটা পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডের কাউন্সিল মোঃ ছাবের হোসেন বলেন, উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর অধিকাংশই ভূমিহীন। বর্তমানে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের অভাবে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন শত শত মানুষ। পৌরসভার নিজস্ব জমি না থাকায় সহসাই পুর্ণবাসন সম্ভব নয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর পুর্ণবাসন প্রকল্পের অধীনে পুর্ণবাসনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি উদ্যেগে দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছেন, এছাড়া তার আর কিছুই করার নেই।
কলাপাড়া ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, উচ্ছেদ হওয়া পরিবার গুলোর খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রকৃত ভূমিহীন তালিকা প্রনয়নের কাজ চলছে। পর্যায়ে ক্রমে পুনর্বাসন করা হবে।